পুরীর দূষণ নিয়ে ক্ষোভ, ৩ সরকারি কর্তাকে তলব
পুরীর সমুদ্রসৈকত, স্বর্গদ্বারের শ্মশান এবং জলের দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ব্যবস্থা না-নেওয়ায় জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। এ বার জল পরিশোধন ও উপকূলীয় বিধি তৈরির ব্যাপারে ওড়িশা সরকারের রিপোর্ট নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করল আদালত। শুধু তা-ই নয়, আগামী ১৪ মার্চ ওড়িশার পরিবেশসচিব, পুরী পুরসভার চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার ও চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে জবাবদিহি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুরীর দূষণ নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তাঁর বক্তব্য ছিল, পুরীর দূষিত ও বর্জ্য জল পরিশোধিত না-করেই সমুদ্রে ফেলা হচ্ছে। এবং যেখানে তা ফেলা হচ্ছে, সেই জায়গার কাছেই প্রচুর পর্যটক নিত্যদিন দফায় দফায় স্নান করেন। নোংরা জল সরাসরি সাগরে ফেলায় তাঁদের সমূহ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়াও জগন্নাথ মন্দির ও স্বর্গদ্বার শ্মশান থেকে ভয়াবহ বায়ুদূষণ ছড়াচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় বিধি ভেঙে বেপরোয়া নির্মাণকাজ চালানো হচ্ছে। সুভাষবাবুর সেই মামলাতেই গত ১৫ জানুয়ারি ওড়িশা সরকারের কাছে হলফনামা চাওয়া হয়েছিল। বুধবার তা সেই হলফনামা পেশ করা হয় জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালে।
ওড়িশা সরকার হলফনামা তো দিয়েছেই। সেই সঙ্গে ওই রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটির একটি রিপোর্টও জুড়ে দিয়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমানে পুরী পুরসভার দূষিত জল পরিশোধনের যে-ব্যবস্থা রয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। তবে আরও একটি পরিশোধন প্ল্যান্ট তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। সেটির কাজ শেষ হয়ে গেলে জলশোধনের সমস্যা মিটে যাবে। একই সঙ্গে দূষিত জল বহনের জন্য ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও ওড়িশা সরকারের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, উপকূলীয় বিধি ভেঙে অন্তত ৩১৬টি নির্মাণকাজ চিহ্নিত করেছেন পুরী-কোণার্ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সেগুলোর মধ্যে ৮৮টি নির্মাণ অবিলম্বে ভেঙে ফেলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে আটটি নির্মাণ এখনও পর্যন্ত ভাঙা হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে নির্মাণকাজ বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার আবেদনকারী সুভাষবাবু অবশ্য জানান, দূষিত জল সমুদ্রে ফেলা কবে বন্ধ হবে, সেই ব্যাপারে ওড়িশা সরকারের ওই রিপোর্টে কোনও নির্দিষ্ট জবাব মেলেনি। আর অন্যান্য ব্যক্তি বা সংস্থা তো বটেই, খাস পুরী পুরসভাও তো উপকূলীয় বিধি ভেঙে নির্মাণকাজ করে চলেছে। কেন এটা চলছে, তার কোনও উত্তর ওড়িশা সরকারের কৌঁসুলি দিতে পারেননি। এর পরেই গ্রিন ট্রাইব্যুনাল ওড়িশা সরকারের তিন উচ্চপদস্থ কর্তাকে ব্যক্তিগত ভাবে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়।
তিন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্তাকে ব্যক্তিগত হাজিরার নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান, বিচারপতি স্বতন্ত্র কুমারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ পুরীর ভূগর্ভস্থ জলস্তর নিয়েও ওড়িশা সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। সুভাষবাবু জানান, পুরীর সৈকতেই মিষ্টি জলের ভাণ্ডার রয়েছে। বিষয়টি তিনি ওড়িশা জল ও নিকাশি পর্ষদের এক কর্তার কাছ থেকে জেনেছিলেন। তাঁর দাবি, সমুদ্রসৈকতের কাছে এমন মিষ্টি জলের ভাণ্ডার ভারতের অন্যত্র বিরল।
কিন্তু পুরীতে সেই জলস্তর থাকা সত্ত্বেও তার সংরক্ষণ ঠিকমতো হচ্ছে না। বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁ অপরিকল্পিত ভাবে দেদার জল তুলে নেওয়ায় মিষ্টি জলের ভাণ্ডার কমে যাচ্ছে। সেখানে লবণাক্ত জল ঢুকে পড়ছে বলে সুভাষবাবুর অভিযোগ। বিষয়টি তিনি আদালতকে জানান। এ ব্যাপারেও ওড়িশা সরকারকে তাদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। ১৪ মার্চ, পরবর্তী শুনানির দিন ওড়িশাকে এই বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.