|
|
|
|
লোকসভা ভোটে রাজনীতিকদের ইস্যু ব্রডগেজ |
উত্তম সাহা • শিলচর ১৯ ফেব্রুয়ারি |
২০০৯-এর মতো ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনেও লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ প্রকল্প বরাক উপত্যকায় প্রধান ইস্যু হতে চলেছে। বিরোধী দলগুলি এখনই বিষয়টি নিয়ে সভা-সমিতিতে বিশেষ ভাবে তুলে ধরছে। কংগ্রেসও মোকাবিলায় যুক্তিজাল বুনছে। কোথাও সাংসদকে দোষারোপ, কোথাও পরিসংখ্যান-সহ কাজের অগ্রগতি জানানোর প্রস্তুতি চলছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল জানিয়ে দিয়েছে, ২০১৫-র মার্চের মধ্যে ব্রডগেজ যাবে বরাকে। মিটারগেজ তুলে দেওয়ার জন্য এ বছরই ১৪ অক্টাবর থেকে ছয় মাসের মেগাব্লক ঘোষণা করেছে রেল।
২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও অন্য সব ইস্যুকে ছাপিয়ে গিয়েছিল লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ প্রকল্প। দশ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ধরে ১৯৯৬ সালে গেজ পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়। কেন নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হল না, সন্তোষজনক জবাব ছিল না কংগ্রেস প্রার্থী তথা তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেবের কাছে। ব্রডগেজের দাবিই নির্বাচনী ফলাফলে তিন নম্বরে ছিটকে দেয় তাঁকে।
বিজেপি সে বার লোকসভা ভোটে জিতে গেলেও ইস্যুটিকে হাতছাড়া করেনি। পাঁচ বছরে যখনই সুযোগ মিলেছে কংগ্রেসকে খোঁচা মেরেছে। লাগাতার আন্দোলন করে গিয়েছে অল বরাক ইয়ুথ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি-সহ বিভিন্ন সংস্থা। সংগ্রাম কমিটি কালও দিল্লি গিয়ে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি দিয়েছে। হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে জনস্বার্থ মামলা করেন সিটিজেন্স ফোরামের পক্ষে ধ্রুবকুমার সাহা ও শ্যামলকান্তি দেব। ১২ ফেব্রুয়ারি আদালত উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলকে ২০১৫-র মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার অজিত পণ্ডিত জানিয়েছেন, ‘‘ওই তারিখের মধ্যে এমনিতেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। একে লক্ষ্যমাত্রা ধরেই ১৪ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ছয় মাসের মেগাব্লক। সে সমেয় পাহাড় লাইনে ট্রেন চলবে না। আমরা মিটার গেজ তুলে দিয়ে ব্রডগেজের লাইন বসাব।’’ এ পর্যন্ত কাজ কতটা এগিয়েছে? অজিতবাবুর হিসেব, এই লাইনে জটিল কাজ বলতে দু’টি সুড়ঙ্গ। ১০নং সুড়ঙ্গটির দৈর্ঘ্য ৩২৩৫ মিটার। এর মধ্যে ২৬৭৫ মিটারের কাজ হয়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি ৬৬০ মিটারের কাজ হয়ে যাবে। ৭ নং সুড়ঙ্গ ১৬৭৮ মিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে ১৩৪৭ মিটারের কাজ সম্পন্ন। এ ছাড়া ৮৯০ মিটার দীর্ঘ ১১ নং সুড়ঙ্গের কাজ প্রায় শেষ। এ সময়ে ফিনিশিং টাচ চলছে। ১২ নং সুড়ঙ্গে ৬৩১ মিটারের মধ্যে বাকি মাত্র ২৫ মিটার।
তিনি জানান, আরেক জটিলতা ছিল ১২৭ নং সেতুতে। বন বিভাগের ছাড়পত্র মিলছিল না। এখন তাও মিটে গিয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। মেগাব্লক নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে, তাকে তিনি অমূলক বলে মনে করেন। অজিতবাবুর দাবি, এখন আর কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই। ২০১৫-র মার্চের মধ্যে লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রূপান্তরের কাজ অবশ্যই সম্পন্ন হবে। তিনি আশাবাদী, এর সঙ্গে যুক্ত অন্য দুটি প্রকল্প —অরুণাচল-জিরিবাম ও বদরপুর-কুমারঘাটও যুক্ত হবে। |
|
|
|
|
|