|
|
|
|
ফেসবুক-নেশা নিয়ে মায়ের বকা, আত্মঘাতী তরুণী |
নিজস্ব প্রতিবেদন
১৯ ফেব্রুয়ারি |
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেসবুক করার জন্য রবিবার রাতে মায়ের বকা খেয়েছিলেন বছর চব্বিশের সুষমা গোস্বামী। সোমবার সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল ঘর থেকে। এ ঘটনা গোরক্ষপুরের। মায়ের বকা খাওয়ার কারণেই এই আত্মহত্যা কি না, উত্তরপ্রদেশের পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। কয়েক মাস আগে কানপুরে ২৩ বছর বয়সী এক তরুণীও ফেসবুক নিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট বা ইন্টারনেটের অত্যধিক নেশার কারণে পারিবারিক অশান্তি ও তার জেরে মর্মান্তিক পরিণতি ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।
গোরক্ষপুরের সুষমা ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন গত বছর সেপ্টেম্বরে। তার পর থেকেই ধীরে ধীরে ফেসবুক দুনিয়ায় আসক্ত হতে শুরু করেন ওই তরুণী। হাজার ছাড়িয়ে যায় তার নেট-বন্ধুর সংখ্যা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যেত কম্পিউটারের সামনে। তা দেখেই রবিবার রাতে সুষমার মা বকাঝকা করেন। সোমবার সকালে দেখা যায় নিথর সুষমা গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে তাঁর ঘরে। সুষমার মা জানিয়েছেন, ঘরের কোনও কাজে সাহায্য না করে শুধুই ফেসবুক করার জন্য গত রবিবার মেয়ের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু বকা খেয়ে সুষমা আত্মহত্যা করেছেন, এ কথা মেনে নিতে পারছেন না তিনি। পুলিশ সুষমার ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। তাতে লেখা, ‘আমাকে ক্ষমা করে দিও মা।’
সুষমার বাবা সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। ক’মাস আগেই বদলি হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে। ভাই ও মায়ের সঙ্গে সুষমা গোরক্ষপুরেই থাকতেন। দিল্লির সেনা স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে গোরক্ষপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছিলেন তিনি।
এটাকে কানপুর বা গোরক্ষপুরের বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা বলে মনে করছেন না কলকাতার মনোবিদরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ফেসবুকের মতো নেট-সমাজের সাইটে তরুণ প্রজন্মের ডুবে থাকা, তা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে বিবাদ ও তার জেরে চরম কিছু করে ফেলার প্রবণতা বাড়ছে এ রাজ্যেও। ইন্টারনেট বা সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্তেই যে এই ধরনের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে তা মেনে নিলেন কলকাতার মনোবিদ প্রশান্ত রায়। তিনি বললেন, “আমাদের মনে রাখা উচিত, ইন্টারনেট একটা মাধ্যম মাত্র। এই ধরনের ঘটনার জন্য অনেকটা দায়ী জীবনযাত্রাও। যে সমাজ ক্রমশ আধুনিক হচ্ছে সেখানে এই ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত নয়। বিভিন্ন কারণে মা-বাবারাও ছেলে মেয়েদের উপর চাপ দিচ্ছেন। মা-বাবাও অনেক সময় ছেলে-মেয়েদের গুণের প্রশংসা করার বদলে খারাপ দিকটার কথাই তুলে ধরেন বেশি। তার জন্য এ প্রজন্মের অনেকেই মৃত্যুকে বেছে নিচ্ছে।” |
|
|
|
|
|