|
|
|
|
অজানা নির্ভয়ার ধর্ষকদের
ফাঁসির সাজা
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
১৯ ফেব্রুয়ারি |
|
|
বিচার মিলল আর এক নির্ভয়ার!
এ মেয়েটির কথা অবশ্য আগে খবরে আসেনি। ঘটনাটা ঘটে নির্ভয়া-কাণ্ডের মাস দশেক আগে। ২০১২ সালেরই ফেব্রুয়ারিতে উদ্ধার হয় রাজধানীর বুক থেকে অপহৃত ১৯ বছরের এক তরুণীর বিকৃত দেহ। জানা যায়, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। দু’বছরের মাথায় বুধবার অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দিল দ্বারকা ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। সেই যেখানে গত বছর সেপ্টেম্বরে ফাঁসির সাজা শোনানো হয় নির্ভয়া-র অপরাধীদের।
গুড়গাঁও-এর একটি কল সেন্টারে কাজ করতেন তরুণী। বোর্ডের পরীক্ষায় বসতে টাকার প্রয়োজন, সে জন্যই চাকরিটা করতেন। ৯ ফেব্রুয়ারি অফিস থেকেই বাড়ি ফিরছিলেন। পথে তাঁকে অপহরণ করেন পাড়ারই তিন যুবক। তিন দিন পরে হরিয়ানার রেওয়ারি জেলার রোধাই গ্রামে একটি মাঠ থেকে উদ্ধার হয় তাঁর বিকৃত দেহ। বিচার প্রক্রিয়ায় চলাকালীন জানা যায়, দোষী সাব্যস্ত তিন জন রাহুল, রবি ও বিনোদ দিল্লির কুতুব বিহারে মেয়েটির পাড়াতেই থাকত। জেরার মুখে তারা জানায়, মেয়েটিকে একাধিক বার ধর্ষণ করে অ্যাসিড ঢেলে দিয়েছিল তাঁর চোখে। নির্যাতনের শেষ সেখানেই নয়। স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে মেয়েটির চোখ উপড়ে নেয়। পরে ডাক্তারি পরীক্ষায় গোটা শরীর জুড়ে অসংখ্য সিগারেটের ছেঁকার চিহ্নও মেলে। জানা যায়, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তাঁর উপর চলেছিল নারকীয় অত্যাচার।
গত ১৩ তারিখ দ্বারকার ফাস্ট ট্র্যাক আদালত ওই তিন যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে। এ দিন সাজা ঘোষণার পর আদালত জানায়, “এরা বেঁচে থাকার অযোগ্য।” বিচারকের কথায়, এই “বিরলের মধ্যে বিরলতম” অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড “যথেষ্ট নয়।” ওরা “সমাজের কীট”। বিচার চলার সময় একবারের জন্যও ভেঙে পড়েনি অপরাধীরা। তাদের ব্যবহারে এতটুকু অনুতাপের ছাপও নেই।
রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে তরুণীর মা বলেন, “যদি সব ছেড়েছুড়ে চলে যেতে পারতাম...। কিন্তু এটা এমন একটা লড়াই, যেটা লড়তেই হতো আমাদের।” আদালত যে সাজাই দিক না কেন, ওই তিন জনকে কোনও দিন মাফ করতে পারবেন না, জানিয়ে দিলেন মা। কুতুব বিহারের বস্তিতে ভাড়া থাকতেন তাঁরা। জানালেন, মেয়ে পড়াশোনা করতে ভালবাসত। বিয়ের গয়না কিনতে চেয়েছিলেন। মেয়ে বলেছিল, গয়না নয়, আগে বাড়ি কিনতে হবে।
গণধর্ষণ, খুন, অপহরণ ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় এ দিন যখন সাজা ঘোষণা হল, আদালতের বাইরে তখন কয়েকশো লোকের উল্লাস। সে ভিড়ে আত্মীয়-পরিজন ছাড়াও রয়েছে কত অচেনা মুখ। অজানা এই নির্ভয়ার অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তিতে তৃপ্ত। |
|
|
|
|
|