মেলেনি ক্ষতিপূরণ, পথ অবরোধে নামল কংগ্রেস
কুম্ভমেলা ফেরত দুর্ঘটনায় মৃতদের বাড়িতে এসে এক বছর আগে প্রত্যেক পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন বর্তমান রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রী। এক বছর গড়িয়ে গেলেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। ওই দুর্ঘটনায় মৃত ও আহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে পথে নামল কংগ্রেস। মঙ্গলবার কোটশিলায় পুরুলিয়া-রাঁচি রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মৃত ও আহতদের নিকটাত্মীয়েরাও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি কুম্ভমেলা ফেরত ঝালদা ২ এলাকার পুণ্যার্থীদের একটি বাস বিহারের গয়ার কাছে একটি সেতুর রেলিং ভেঙে চল্লিশ ফুট নীচে পড়ে যায়। ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ২২ জন। ঝালদা ২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ফণিভূষণ কুমার বলেন, “দুর্ঘটনার পরে এলাকাবাসী হিসেবে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মহকুমাশাসকও গিয়েছিলেন। যে সমস্ত গ্রামের বাসিন্দা দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন, সেই গ্রামগুলিতে দুর্ঘটনার পর দিন রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো গিয়ে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন।” তিনি জানান, আহতদের ঠিক কত আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, তা অবশ্য মন্ত্রী তখন ঘোষণা করেননি। কিন্তু, বছর ঘুরলেও কেউ ক্ষতিপূরণ পাননি।
কোটশিলায় পথে নামলেন কংগ্রেস কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
কোটশিলা থানা এলাকার চিতরপুর গ্রামের বাসিন্দা ধনঞ্জয় পরামানিক বলেন, “আমার বাবা নিতাই পরামানিক ওই দুর্ঘটনায় মারা যান। আজ অবধি আমরা ক্ষতিপূরণের কোনও টাকা পাইনি।” রামপুর গ্রামের রামচরণ মাহাতোর ক্ষোভ, “আমার স্ত্রী কাজল মাহাতো ওই দুর্ঘটনায় মারা যায়। প্রশাসনের কেউ আর ফিরেও তাকায়নি।” চ্যেকা গ্রামের বাসিন্দা প্রবীরচন্দ্র কুমারের বাবা ধীরেন্দ্রনাথ কুমারের মৃত্যুও হয়েছিল সেই দুর্ঘটনায়। প্রবীরবাবুর অভিজ্ঞতা, “মন্ত্রী বলে গিয়েছিলেন ক্ষতিপূরণ বাবদ দুই লক্ষ টাকা পাব। তার পরে একাধিকবার প্রশাসনিক দফতরে যোগাযোগ করেছি। কোন টাকাই পাইনি।” এই গ্রামেরই বাসিন্দা পঙ্কজ কুমারের বাবা মারাত্মক জখম হয়েছিলেন। এখনও চিকিৎসা চলছে রাঁচিতে। পঙ্কজবাবুর কথায়, “আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। আমি বেকার। ক্ষতিপূরণ পাইনি।”
মৃত ও আহতদের নিকটাত্মীয়েরা জানিয়েছেন, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই তাঁরা এ দিন কংগ্রেসের সঙ্গে অবরোধে যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এ দিন সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবরোধের ডাক দেওয়া হলেও পুলিশ ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই অবরোধ তুলে দেয়। মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া পশ্চিম) নিমাইচাঁদ হালদার বলেন, “ওই দুর্ঘটনার পরে আমিও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। দুর্ঘটনার বিষয়টি নিয়ে একটি রিপোর্ট বিপযর্য় মোকাবিলা দফতরে পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে আর কিছু জানা নেই।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক নেপাল মাহাতোর বক্তব্য, “যেহেতু এক জন মন্ত্রী এলাকায় গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাই আমি বিধানসভায় এ নিয়ে প্রশ্ন করেও সদুত্তর পাইনি।” মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “ক্ষতিপূরণের বিষয়টি কোথায় আটকে রয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.