চাষের জন্য ব্লক অফিসে বৃষ্টির জল ধরার ভাবনা
জেলার সমস্ত পঞ্চায়েত দফতরে ও ব্লক অফিসে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে চান জেলাশাসক। মঙ্গলবার জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রে এক ভ্রাম্যমান প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে গিয়ে ‘রেন ওয়াটার হার্ভেস্টিং সিস্টেম’ নামে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের একটি মডেল দেখেন তিনি। ওই মডেলে এতটাই মুগ্ধ হন যে সঙ্গে সঙ্গেই অনুষ্ঠানে হাজির মডেল নির্মাতা ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ওয়েট ল্যান্ড ম্যানেজমেন্টের কর্তাদের কাজের বরাতও দিয়ে দেন। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আপনারা ওই মডেলের প্রজেক্ট রিপোর্ট জমা দিন। প্রতিটির জন্য কত খরচ লাগবে জানান। তাহলেই আমরা প্রথমে সমস্ত ব্লক অফিসে, পরে সব গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই মডেলে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করতে পারব। টাকার অভাব হবে না।”
এমনিতে বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা নানা ভাবে ব্যবহার করতে রাজ্য সরকার জল ধরো, জল ভরো নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে। সেই কাজে গ্রামে গ্রামে বেশ কিছু পুকুর কাটা হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। এর পাশাপাশি বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা ব্যবহারের একটি মডেল তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশন্যাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়াম দফতর।
এই সেই ভ্রাম্যমাণ মডেল। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রে যে মডেলটি বসানো হয়েছে তাতে ১০ হাজার লিটার জল ধরে রেখে, শোধন করে নানা কাজে, এমনকী পানীয় জল হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামের ডিরেক্টর ইমদাদুল ইসলাম বলেন, “রাজ্যের সমস্ত বিজ্ঞানকেন্দ্রগুলিতে প্রতিবারই জনগনের কাজে লাগবে এমন নতুন মডেল আমরা বসাই। এ বারে বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও দার্জিলিংয়ে বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা দিয়ে নানা কাজ করা যায় এমন একটি করে মডেল বসানো হয়েছে। বর্ধমান জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের এই মডেল তৈরি করতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে চার লক্ষ টাকা।”
ইনস্টিটিউট অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ওয়েট ল্যান্ড ম্যানেজমেন্টের বিজ্ঞানী তপন সাহা বলেন, “যে ভাবে মাটির নিচের জলস্তর কমছে, তাতে বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নেই। কারণ অদূর ভবিষ্যতে মাটির নিচের জল আর তোলা যাবে না।” তাঁর দাবি, “এত জল তোলা হয়েছে যে রাজ্যের অনেক ব্লকেই ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক ও ফ্লোরাইড মিলছে। অন্তত ৮০টি ব্লকের জলই দূষিত হয়ে গিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ধান চাষের জন্য আমরা বেপরোয়া জল তুলছি। এক কিলোগ্রাম চাল পেতে সব মিলিয়ে আমাদের প্রায় ২৭০০ লিটার জল খরচ হয়। এক কিলো গম পেতে লাগে ১২০০ লিটার জল। তাহলে বুঝতেই পারছেন, জলের কী বিপুল খরচ হচ্ছে চাষবাসে।”
জলের অপচয় রোধ করতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায়ের পরামর্শ, “সকালে উঠে মুখ ধোওয়া থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন জল মেপে ব্যবহার করা উচিত। কোনওমতেই যেন জল নষ্ট না হয় সেদিকে কড়া নজর রাখতে হবে।”
জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্তারা জানিয়েছেন, যে মডেলটি বসানো হয়েছে, তাতে বৃষ্টির জল শোধন করে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পানীয় জলের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে তিন হাজার লিটার। বাকি ৭ হাজার লিটার ব্যবহার করা হচ্ছে বাগানের গাছে জল দিতে। কর্তাদের দাবি, গ্রামবাসীরা চাইলে এই জলের কিছুটা দিয়ে নিজেদের বাড়ি সংলগ্ন জমিতে চাষও করতে পারেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.