কেন্দ্রের বঞ্চনার নালিশ রাজ্য বাজেটে, সংসদেও
১৭ ফেব্রুয়ারি
রাজ্য বাজেটে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর্থিক অসহযোগিতার কড়া নালিশ তুলেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। পাশাপাশি ইউপিএ সরকারের শেষ বাজেটেও রাজ্যকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে সংসদে সরব হলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
পশ্চিমবঙ্গের ঘাড় থেকে ঋণের বোঝা কমাতে তিন বছর ধরে দিল্লির কাছে দরবার করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাড়া দেওয়ার জন্য এটাই ছিল কেন্দ্রের শেষ সুযোগ। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ এ বারও পশ্চিমবঙ্গের দাবির প্রতি সুবিচার করলেন না অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। পশ্চিমবঙ্গ সরকার বার বার দরবার করার পরেও প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের উপর সুদ মকুব করা নিয়ে নীরবই থাকল কেন্দ্র। অমিত মিত্র এ নিয়ে তাঁর বাজেট বক্তৃতায় যেমন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, সংসদে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সৌগত রায়রা। তাঁদের অভিযোগ, বেহাল আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে কোনও পদক্ষেপ না-করে কেন্দ্র ক্রমশ কোণঠাসা করে ফেলার চেষ্টা করছে পশ্চিমবঙ্গকে।
বাজেট বক্তৃতায় অমিত মিত্র বলেন, ‘আগের বামফ্রন্ট সরকারের পাপের জন্য ২০১১-১২ থেকে ২০১৩-১৪ সালের মধ্যে মূল ও সুদ বাবদ কেন্দ্র ৬৯,০৬৫.৮১ কোটি টাকা কেটে নিয়েছে। এই টাকায় কত রাস্তাঘাট, কত স্কুল-কলেজ, কত জলপ্রকল্প তৈরি হতে পারত।’ রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ, এর পরেও সিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য ৩৭৮৩.৪৩ কোটি টাকা কেন্দ্র দেয়নি। চলতি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ৮৫০.৪২ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় অনুদান পাওয়ার কথা থাকলেও মেলেনি।
কন্যাশ্রী প্রকল্প
কমেছে প্রসূতি মৃত্যু
ন্যায্য মূল্যে ওষুধ
গ্রামীণ রাস্তা
জঙ্গলমহল
দার্জিলিং
কেন্দ্রের বঞ্চনা
ধার মকুব হয়নি
কমেছে কেন্দ্রীয় অনুদান
আর্থিক সাহায্য নিয়ে রাজ্যের দাবি না-মেটার পাশাপাশি স্বাস্থ্য-শিক্ষা-সহ বিভিন্ন খাতে বাংলার ভাগ্যে যে ভাবে নাম-মাত্র দাক্ষিণ্য জুটেছে, তা নিয়েও আজ সরব হন তৃণমূল সাংসদরা। পোস্টার হাতে ওয়েলে নেমে শোরগোল করেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, সুব্রত বক্সী, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না দে নাগ, কাকলি ঘোষ দস্তিদারেরা। পরে সুদীপবাবু জানান, “একটি দাবি কয়েক বছর ধরে করে আসছি। তা হল পশ্চিমবঙ্গের বিপুল ঋণের উপর সুদ মকুব করতে হবে। কিন্তু আজকের বাজেটে বিষয়টির উল্লেখ তো দূরস্থান, বাংলার জন্য সে ভাবে কোনও বরাদ্দই রাখা হয়নি।” অন্তর্বর্তী বাজেটের পরে রেল বাজেট নিয়ে আলোচনা শুরু হলে একই দাবিতে হইচই করে গোটা দিন সংসদ মুলতুবি করে তৃণমূল। সেই সুযোগে কোনও আলোচনা ছাড়াই আজ রেল বাজেট পাশ করিয়ে নেয় সরকার।
কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহীন। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, প্রণববাবু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের জন্য বিভিন্ন খাতে অর্থ বরাদ্দ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা সেই সুযোগ নিয়েছেন। অধীর বলেন, “শুধু বাড়তি বরাদ্দ নয়। জেএনএনইউআরএম-র অধীনে বাড়তি ১২০০ বাস, কান্দি মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের ঘোষণার সুফল পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।”
এ দিনের অন্তর্বর্তী বাজেটে বাংলার বিভিন্ন প্রকল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য কার্যত ন্যূনতম বরাদ্দ করেছেন চিদম্বরম। পরমাণু ক্ষেত্রে গত বারের চেয়ে ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার সায়েন্সের। বেঙ্গল কেমিক্যালের জন্য চিদম্বরম গত বার যে বরাদ্দ রেখেছিলেন, এ বারও তাই রেখেছেন। মাত্র ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ বেড়েছে ফলতা বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে। তবে অমৃতসর-কলকাতা শিল্প করিডরের জন্য এই প্রথম ৪৯ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টেরও। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পেয়েছে মাত্র ৯ কোটি টাকা।
সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধিতে বাজিমাত করেছে রাজ্য। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সংস্কার ও অন্যান্য কাজে খরচের জন্য ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে। এশিয়াটিক সোসাইটি ও ন্যাশনাল লাইব্রেরির ক্ষেত্রে বরাদ্দ বেড়েছে ৭ ও ৯ কোটি টাকা। দু’শো বছর পূর্তি উপলক্ষে গত বাজেটে কলকাতা মিউজিয়াম ১১৩ কোটি পেলেও এ বার তা দাঁড়িয়েছে ৭২ কোটিতে। প্রায় দেড় কোটি বরাদ্দ বেড়েছে রামমোহন রায় লাইব্রেরিরও।
আজ চিদম্বরম বলেন, গত দশ বছরে ইউপিএ কী করেছে, ইতিহাস বিচার করবে! তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ান বলেন, “ইতিহাস নয়, মানুষ খুব শীঘ্রই কংগ্রেস সরকারের বিচার করবে!” সুদীপবাবু বলেন, “দুর্নীতির ইতিহাস রচনা করেছে এই সরকার। ”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.