কয়লা-সঙ্কটে ফরাক্কায় উৎপাদন কমাল এনটিপিসি
য়লার অভাবে এনটিপিসি সোমবার থেকে এক ধাক্কায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিল ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে।
মজুরি বাড়ানোর দাবিতে ঝাড়খণ্ডের বারহেট-এ ঠিকাশ্রমিকদের রেলপথ অবরোধের ফলে গত আট দিন ধরে রাজমহল থেকে কয়লা আসছে না ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। তার ফলে মজুত কয়লায় টান পড়েছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মুখ্য জনসংযোগ অধিকর্তা শৈবাল ঘোষ জানান, ৬টি ইউনিটে ২১০০ মেগাওয়াট বিদ্যু উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৩৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা লাগে। এর তিন ভাগের একভাগই আসে ঝাড়খণ্ডের রাজমহলের লালমাটিয়া থেকে এনটিপিসি’র নিজস্ব রেলপথে। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ঝাড়খণ্ডের বারহেট-এ কর্মরত শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল লাইন অবরোধ করে রাখার ফলে গত সোমবার থেকে ওই কয়লা আসছে না।
শৈবালবাবু বলেন, “ইন্দোনেশিয়া থেকে জলপথে কয়লা আসা বন্ধ আছে দু’সপ্তাহ। অন্য রাজ্যের কোলিয়ারি থেকে যে কয়লা আসে তা-ও অনিয়মিত। গত দু’দিনে মাত্র ৯টি রেক এসেছে। এই অবস্থায় যে কোনও মুহূর্তে ইউনিট বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে আগেই জানানো হয়েছিল প্রেস নোটে।”
লালমাটিয়া থেকে এনটিপিসি’র ৮৫ কিলোমিটার নিজস্ব যে রেলপথে ফরাক্কায় কয়লা আসে, সেই রেলপথ দেখভালের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা রয়েছে। তাঁর অধীনে প্রায় ৪০০ শ্রমিক কাজ করেন সেখানে। ঝাড়খণ্ডের ন্যূনতম সরকারি মজুরি ১৬৭ টাকা। তার সঙ্গে বোনাস ও অন্য ভাতা মিলিয়ে দৈনিক ২৮৯ টাকা করে মজুরি দেওয়া হয় শ্রমিকদের। আছে পিএফের সুবিধাও।
শৈবালবাবু বলেন, “এনটিপিসি সমস্ত ঠিকা শ্রমিককে যে হারে মজুরি দেয় রেলপথ দেখভালে নিযুক্ত শ্রমিকেরাও সেই হারে মজুরি পান। তা সত্ত্বেও মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত ৮ দিন ধরে ঝাড়খণ্ডের বারহেটের কাছে রেল লাইন অবরোধ করে রেখেছেন শ্রমিকেরা। ফলে রাজমহল থেকে কয়লা পরিবহণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে রয়েছে। শ্রমিকদের সঙ্গে দফায়-দফায় আলোচনায় বসেছেন এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সমাধানসূত্র বেরোয়নি। এই মুহূর্তে ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যা কয়লা মজুত রয়েছে তাতে বড়জোর আর ৫ থেকে ৬ দিন চলবে। সেদিকে খেয়াল রেখেই সোমবার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ৬০০ মেগাওয়াট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
কয়লার জোগানে এ ভাবে ঘাটতি চলতে থাকলে উৎপাদন ধীরে ধীরে কমিয়ে ইউনিট বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনও পথ থাকবে না বলে দাবি এনটিপিসি-র। সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হবে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলের ৪ রাজ্যেই। এ দিকে, শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। বারহেটের মুক্তি মোর্চার বিধায়ক হেমলাল মুর্মু বলেন, “এনটিপিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গত আট দিনে তিন বার শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক করেছি। কিন্তু এনটিপিসি-র একগুঁয়েমি মনোভাবের জন্য সমস্যা মিটছে না। শ্রমিকদের দাবি ন্যায়সঙ্গত বলেই তাঁদের আন্দোলনের পাশে আছি আমরা। পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় কম মজুরি পায় এই ঠিকাকর্মীরা। ওদের মজুরি বাড়াতেই হবে।”
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, “এনটিপিসি-র পক্ষ থেকে এখনও এ ব্যাপারে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। জানালে নিশ্চয় হস্তক্ষেপ করা হবে।” রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্তও বলেন, ‘রাজ্যকে এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতির কথা এখনও জানানো হয়নি। পরিস্থিতির কথা জানিয়ে এনটিপিসি রাজ্য সরকারের সাহায্য চাইলে রাজ্য সরকার ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে কথা বলবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.