স্বাস্থ্যবিধির প্রাথমিক পাঠ দেওয়া হয় প্রাথমিক স্কুলে। আর সেই প্রাথমিক স্কুলেই স্বাস্থ্যবিধিকে উপেক্ষা করে তিন মাস ধরে পুকুরের জলে চলছে মিড-ডে মিলের রান্না। মানবাজার থানার গাইডুমুর গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের রান্না করা খাবার দেওয়া নিয়ে এমনই অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ। এলাকার বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা তাই প্রতিকার চেয়ে বিডিওকে জানিয়েছেন। অভিভাবকদের ক্ষোভ বিভিন্ন মহলে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি।
গাইডুমুর প্রাথমিক স্কুল চত্বরে জলের কোনও সংস্থান নেই। স্কুলের বাইরে রয়েছে একটি নলকূপ। এতদিন সেই নলকূপের জলে রান্না ও থালা-বাসন ধোওয়ার কাজ চলত। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্তোষ দাস বলেন, “স্কুলের বাইরের নলকূপটি ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে বিকল হয়ে যাওয়ায় আমরা সমস্যায় পড়েছি। স্কুলে জলের সংস্থান নেই। বিডিও ও স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে সমস্যার কথা জানিয়েছি। জল না থাকায় শৌচাগারও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।”
তিনি দাবি করেন, কংসাবতী জলাধারের জল এনে রাঁধুনিরা কিছুদিন মিড-ডে মিলের রান্না করেছিলেন। তা স্বাস্থ্যসম্মত নয় জানি। গ্রামের বাসিন্দারা কিছুদিন আগে স্কুলে এ নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। রাঁধুনিদের ডেকে সতর্ক করে দেওয়ার পরে গ্রামের ভিতরে কিছুটা দূর থেকে নলকূপের জল এনে রান্না হচ্ছে।”
নলকূপের জলে রান্না হচ্ছে বলে প্রধান শিক্ষক দাবি করলেও স্থানীয় বাসিন্দা ভাস্কর বাউরি, নরেন সিং সর্দার, অজিত গোপ মণ্ডলদের অভিযোগ, “জলাধারের জল কাছে থাকায় অধিকাংশ দিন ওই জলেই রান্না হচ্ছে। স্কুলে পানীয় জলের ব্যবস্থা ও গ্রামের রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে ২০ ডিসেম্বর বিডিওকে জানিয়েছি।” এর পরে প্রধান শিক্ষক বলেন, “সব সময় তো রাঁধুনিদের লক্ষ রাখা সম্ভব নয়। তবে ওঁদের বলেছি নলকূপ যতদূরেই থাকুক, সেখান থেকে জল এনে রান্না করতে হবে।”
মানবাজার ১ চক্রের দায়িত্বে থাকা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেন মণ্ডল বলেন, “আমি সদ্য এই চক্রের দায়িত্ব পেয়েছি। এ বিষয়ে বিডিও-র সঙ্গে আলোচনা করব।” মানবাজারের বিডিও সায়ক দেব বলেন, “স্কুলের বাইরে থাকা নলকূপটির পাইপ পড়ে গিয়ে এই সমস্যা হয়েছে। এখনই নতুন নলকূপ বসানো সম্ভব নয়।” বিকল হওয়া ওই নলকূপ দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও তাঁর আশ্বাস। |