ছোটবেলায় যা ছিল নেহাতই খেলার সঙ্গী, সেই গুলতি দিয়ে পাচারের সোনা উদ্ধার করলেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দুই জওয়ান। রবিবার সকালে নদিয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানার বানপুরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় শুধুমাত্র গুলতি দিয়ে তাঁরা পাচারকারীদের তাড়িয়েছেন বলে দাবি বিএসএফ-এর। উদ্ধার হয় প্রায় ১ কেজি ১৬৫ গ্রাম সোনা। ১০টা সোনার বিস্কুট।
আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করেই এই সাফল্য মিলেছে দাবি করে বি আর ডোলে ও এ কে বর্ধলয় নামে ১১৩ নম্বর ব্যটেলিয়ানের ওই দুই জওয়ানকে পুরস্কৃত করতে চলেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। বিএসএফ-এর ডিআইজি পুষ্পেন্দর সিংহ রাঠোর বলেন,“শুধু মাত্র গুলতি ব্যবহার করে আমাদের দু’জন জওয়ান যে ভাবে সোনা উদ্ধার করলেন তা প্রশংসনীয়। আমরা এই কৃতিত্বের জন্য ওঁদের পুরস্কৃত করব।” |
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই জওয়ান রবিবার সকালে বার্নপুরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে টহল দিচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁরা দেখেন ২৪ নম্বর গেটের কাছে কাঁটাতারের ওপারে দু’জন বাংলাদেশি ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে আছে। কাঁটাতারের ওপার থেকে তারা দু’টি ছোট ছোট থলি ছুঁড়ে দেয় এপারে। সুযোগ বুঝে জওয়ানরা হাতের গুলতি দিয়ে দুই বাংলাদেশির উদ্দেশে পাথর ছুঁড়ে মারেন। আচমকা হামলায় পালিয়ে যায় দু’জন। এর মধ্যেই এপারের দুই ব্যাক্তি থলির দিকে এগিয়ে এলে বিওএসএফ জওয়ানরা তাদের দিকেও গুলতি দিয়ে পাথর ছুঁড়তে থাকেন। কোনও রকমে একটি থলি নিয়ে পালিয়ে যায় ওই দু’জন। অন্য থলিটি নিয়ে ক্যাম্পে আসেন জওয়ানরা। খুলে দেখা যায় ভিতরে সাজানো সোনার বিস্কুট।
তবে, সোনা উদ্ধারের চেয়েও গুলতির সাফল্য নিয়েই বেশি উচ্ছ্বসিত জওয়ানরা। ডিআইজি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ছাড়াও আমরা মানবিক কারণে খুব প্রয়োজন না হলে গুলি চালাচ্ছি না। চোরাচালানকারীদের ঠেকাতে তাই জওয়ানরা গুলতির সাহায্য নিচ্ছেন এখন। আর সেটা যে কতটা কাযর্করী, পরিষ্কার হয়ে গেল এই ঘটনা থেকেই।”
জওয়ান বি আর ডোলের প্রতিক্রিয়া, “ছোটবেলায় আমি গুলতি দিয়ে পাখি মেরেছি। আমার সেই শৈশবের খেলার সাথীই যে একদিন দেশের কাজে লেগে যাবে তা কোনও দিন ভাবতে পারিনি। বিশ্বাস হচ্ছে না যে এর জন্য পুরস্কারও পাব।”
চাপড়ার রাঙ্গিয়ারপোতা থেকে দিন দু’য়েক আগে পাচার হওয়ার সময় ২২ কেজি রুপো উদ্ধার করেছিল বিএসএফ। পুষ্পেন্দর সিংহ রাঠোর বলেন, “যে ভাবে আমাদের জওয়ানরা একটার পর একটা সাফল্য দেখাছে তাতে আমরা খুবই খুশি। সীমান্তে আরও কড়া প্রহরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” |