রেকর্ড তুষারপাতে বিধ্বস্ত জাপানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ইউরোপ আর আমেরিকার পরে এ বার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে এশিয়ার এক দেশ। তুষার ঝড়ের দাপটে জাপানে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। দেশ জুড়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ।
আসলে গত কয়েক দিন ধরেই ভয়াবহ তুষার ঝড়ের তাণ্ডব চলছে জাপানে। বিশেষত দেশের উত্তর-পূর্বাংশের একটা বড় অংশের জনজীবন পুরোপুরি বিধ্বস্ত। প্রায় সাত হাজার মানুষ ঘরবন্দি। |
আটকে থাকা গাড়ির লাইন। কারুইজাওয়ায়। ছবি: রয়টার্স। |
এই অবস্থায় গোটা জাপান জুড়েই ভেঙে পড়েছে পরিবহণ ব্যবস্থা। পুরু বরফের আস্তরণে ঢাকা জাতীয় সড়কগুলিতে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি। ১৮ নম্বর জাতীয় সড়কেই যেমন শয়ে শয়ে গাড়ি আর ট্রাক আটকে রয়েছে। গাড়ি ও ট্রাকের চালকদের খাবার সরবরাহের কাজে নেমেছে পরিবহণ মন্ত্রক। দেশের অনেক এলাকাতেই চালানো যাচ্ছে না ট্রেন। যে সব জায়গায় ট্রেন চলছে, সেখান থেকেও আসছে দুর্ঘটনার খবর। টোকিওর শহরতলিতে যাত্রিবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। রেল পরিষেবার সঙ্গে ব্যাহত বিমান পরিষেবাও। গত কয়েক দিনে দেশ জুড়ে বাতিল হয়েছে প্রচুর বিমান।
বরফের কবলে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে রাজধানী টোকিওতেও। কয়েক দিন ধরেই সেখানে রেকর্ড তুষারপাত হয়েছে। প্রশাসন টোকিওর রাস্তা থেকে বরফ সরালেও আগামী কয়েক দিনে আবার ভারী তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তারা আরও জানিয়েছে, তুষার-ঝড় এখন দেশের উত্তর দিক ধরে এগোচ্ছে।
পশ্চিম জাপানের ইয়ামানাশি এলাকায় আবার প্রবল খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। দোকানদারেরা জানাচ্ছেন, তাজা সব্জি আর ফল পাওয়া এখন দুষ্কর। আগামী কয়েক দিন এ ভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ প্রবল সমস্যার মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করেছেন তাঁরা। তবে এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শিঞ্জো আবে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে সরকারি সাহায্যের দল পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আজ জাপানি পার্লামেন্টে তিনি বলেছেন, “মানুষের প্রাণ ও সম্পত্তি রক্ষায় যা যা করা সম্ভব, স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্যে সরকার তা করবে।” |