প্রেসিডেন্সি সরকারি কলেজের তকমা ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পরে কলকাতায় আরও একটি সরকারি কলেজ গড়ার দাবি উঠেছিল। এই ব্যাপারে আবেদন জানিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি। সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকার মহানগরে একটি নতুন সরকারি মহিলা কলেজ গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতায় মেয়েদের পুরনো সরকারি কলেজের মধ্যে আছে বেথুন এবং লেডি ব্রেবোর্ন।
সরকারের তরফে ওই শিক্ষক সমিতিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কলকাতার হেস্টিংস অঞ্চলে দুই একর জমিতে একটি সরকারি কলেজ গড়ে তোলা হবে। সেখানে শুধু মহিলারাই পড়তে পারবেন। অবশ্য মহিলাদের সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদেরও শিক্ষক হতে বাধা নেই। সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার রবিবার সংগঠনের ৪২তম বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে বলেন, “কলকাতায় এই ধরনের একটি কলেজের প্রয়োজন ছিল। সরকার সেটা উপলব্ধি করেছে।”
দেবাশিসবাবু আরও জানান, দার্জিলিঙে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) তৈরির পরে সেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থাও ওই প্রশাসনের আওতায় পড়বে বলে সরকারি স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন, দার্জিলিং গভর্নমেন্ট কলেজের শিক্ষকেরা চাইলে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এডুকেশন সার্ভিস’-এর অধীনে থেকে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
সরকারের একটি উদ্যোগে অবশ্য আপত্তি আছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির। কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজকেও প্রেসিডেন্সির আদলে বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য সরকারি স্তরে ভাবনাচিন্তা চলছে বলে জানতে পেরেছে তারা। সমিতি এর বিরোধিতা করছে। প্রেসিডেন্সিকে বিশ্ববিদ্যালয় করারও বিরোধিতা করেছিল তারা। দুই ক্ষেত্রেই সমিতির যুক্তি, গোটা দেশে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, একক বা ডিম্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেলে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় নম্বর বাড়ার সুযোগ থাকলেও শিক্ষার মান নেমে যায়। কারণ, ওই সব ক্ষেত্রে পাঠ্যক্রম তৈরি, পড়ানো, পরীক্ষার প্রশ্ন করা এবং খাতা দেখা পুরো প্রক্রিয়াতেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যুক্ত থাকেন। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও অস্বচ্ছতার আশঙ্কা বেশি থাকে ওই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজ্যের সব সরকারি ডিগ্রি কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির দাবি ফের তুলেছেন দেবাশিসবাবুরা। |