মাঘের শেষে বর্ষাকে প্রবচন যতই ধন্য ধন্য করুক না কেন সাধারণ মানুষ তাকে মোটেও চাইছেন না।
শনি এবং রবি-সপ্তাহ শেষের দু’দিনের লাগাতার বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষ রীতিমত নাজেহাল। বিহার-ঝাড়খণ্ডের নিম্নচাপ ঘুরে দাঁড়াতেই মাঘী পূর্ণিমার চাঁদ সেই যে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়ে মুখ ঢাকল মেঘের চাদরে, তারপর দু’দিন আর তার দেখা মিলল না। ফাল্গুনের প্রথম দিনে বসন্ত আসর জমিয়ে বসতে না বসতেই অকাল বর্ষার রুদ্র রূপ দেখে প্রায় ধুলো পায়ে চম্পট দিলেন।
তাপমাত্রা এক লাফে ১৬ থেকে ১৩ ছুঁইছুঁই। শনি-রবি এই দু’দিন ২৪ ঘণ্টায় নদিয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬৫ মিলিমিটার। রবিবার সারাদিনই জেলার সর্বত্র এক নাগাড়ে বৃষ্টি হয়ে চলেছে। কখনও রিমঝিম, কখনও মুষলধারায়। অসময়ের বৃষ্টির জেরে রবিবার হঠাত্ করেই যেন বন্ধের চেহারা নিয়েছে। এমনিতেই ছুটির দিন হওয়ায় অফিস কাছারি বন্ধ। পথে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া বা নিত্যযাত্রীদের ভিড় নেই। সুনসান কৃষ্ণনগর জেলা বাসস্ট্যান্ড। পথে বাসের দেখা মিলেছেও খুব কম।
|
নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির তরফে অসীম দত্ত বলেন, “সারাদিনে যাত্রীর সংখ্যা হাতে গোনা যায়। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কে এমন দিনে পথে বের হতে চায় বলুন তো? প্রায় ৩৫ শতাংশ বাস এ দিন যাত্রীর অভাবে কম চলেছে বিভিন্ন রুটে। দুপুরে কোনও একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা থাকায় ঘণ্টাখানেক কিছু পরীক্ষার্থীর ভিড় ছিল। তাছাড়া সারাদিন একদম ফাঁকা।
ইস্কন চত্বরেও তেমন লোকজন ছিল না এ দিন। ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাস বলেন, “এ দিন কেবল বাসে করে বিভিন্ন জেলার পর্যটকেরা এসেছেন। কেননা ওঁদের সবকিছু আগে থেকেই বুকিং করা ছিল। না এসে উপায় ছিল না।” এ দিন রবিবারের স্পেশাল কোচিংয়ে যেতে পারেনি বহু মাধ্যমিক -উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
এই একই কারণে কার্যত ভেস্তে গেছে মুর্শিদাবাদের ডোমকলের দু’দিনের দক্ষিণবঙ্গ উত্সব। দু’দিনই টানা বৃষ্টিতে পণ্ড হয়ে যায় উত্সব। রবিবার নবদ্বীপে ছিল জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের পরিদর্শন বাংলো উদ্বোধনের অনুষ্ঠান। রাজ্যের তিন মন্ত্রী-সহ জেলার এক ঝাঁক নেতা প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে উপস্থিতি হয়েছিলেন। তবে এই বৃষ্টিতে খুশি কিন্তু রাজ্যের বোরো ধান চাষিরা। বোরো বসানোর এই সময়ে এমন বৃষ্টিতে তারা খুব খুশি। পাশাপাশি এই বৃষ্টি আম, লিচুর মতো ফলের জন্য ভাল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। |