প্রাথমিক স্কুলের দুই শিক্ষকের বিবাদের জেরে বন্ধ পঠনপাঠন
প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিবাদ। তার জেরে প্রায় সাত মাস ধরে মিড ডে মিল বন্ধ হাওড়ার দক্ষিণ পাঁচলা ২ নম্বর প্রাথমিক স্কুলে। ছাত্রছাত্রীরা পায়নি ইউনিফর্ম কেনার টাকাও। এ সবেরই প্রতিবাদ জানাতে গ্রামবাসীরা গত সোমবার স্কুলে এসে বিক্ষোভ দেখান। তার পর থেকেই স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ।
জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের সভাপতি পুলককান্তি দেব বলেন, “বিষয়টি জানি। প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক তাঁর আমলের খরচের হিসাব এবং স্কুলের দায়িত্ব প্রধান শিক্ষককে বুঝিয়ে না দেওয়ার জন্যই সমস্যা হচ্ছে। স্থানীয় স্কুল পরিদর্শককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৮৭ জন। দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক না থাকায় তরুণকুমার দেশমুখ নামে এক শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে স্কুল চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ১ মার্চ এই স্কুলে পাকাপাকি ভাবে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন অনুজকুমার নস্কর। স্কুলের খরচের হিসাব নিয়ে দু’জনের বিবাদের শুরু সেই সময় থেকেই। তরুণবাবু সঠিক হিসাব দিতে পারেননি, এই অভিযোগ তুলে মিড ডে মিল-সহ স্কুলের যাবতীয় দায়িত্ব নিতে রাজি হননি অনুজবাবু। মিড ডে মিল চালাতে থাকেন তরুণবাবুই। কিন্তু এ ভাবে খুব বেশিদিন তা চালানো যায়নি। শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালের অগস্ট মাস থেকে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে যায়। দু’জনের বিবাদের জেরে ছাত্রছাত্রীদের পোশাকের টাকাও বিলি করা যায়নি।
দুই শিক্ষকের বিবাদ মেটানোর জন্য গ্রামবাসীদের তরফে একাধিকবার জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদ, জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রমুখের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এর পরেও সমস্যা মেটেনি। তার জেরেই তাঁরা সোমবার বিক্ষোভ দেখান। গ্রামবাসীদের তরফে সুশান্ত রায়, উত্তম মেউর, শঙ্কর কোলে প্রমুখের বক্তব্য, “দুই শিক্ষক ঝগড়া করছেন। ক্ষতি হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। তারা না পাচ্ছে মিড ডে মিল, না পাচ্ছে পোশাক কেনার টাকা।”
অনুজবাবুর দাবি, “স্কুলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের জন্য একটি কেন্দ্র তৈরিতে সর্বশিক্ষা দফতর ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা খরচ হয়ে গেলেও কেন্দ্র তৈরির কাজ একটুও হয়নি। মিড ডে মিলের খরচের কোনও হিসাবও স্কুলে ছিল না। এই অবস্থাতেই তরুণবাবু আমাকে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে চাওয়ায় আমি রাজি হইনি।” একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, “খরচের সঠিক হিসাব বারবার তরুণবাবুর কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি সেই হিসাব দেননি।”
পক্ষান্তরে, তরুণবাবুর দাবি, “মিড ডে মিলের হিসাব অনেকটাই সেরে ফেলেছি। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের কেন্দ্র তৈরির টাকার হিসাব এখনও করা বাকি। এক সপ্তাহের মধ্যে সব হিসাব ও দায়িত্ব প্রধান শিক্ষককে বুঝিয়ে দেব।”
জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক তাঁর আমলের খরচের হিসাব এবং স্কুলের দায়িত্ব প্রধান শিক্ষককে বুঝিয়ে না দেওয়ায় তাঁর বেতন তিন মাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহায়তা করবেন এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তাঁর বেতন ফের চালু হয়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি তিনি রাখেননি। সোমবার গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে সোমবার পাঁচলা চক্রের প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক দিব্যেন্দু পাল স্কুলে এসেছিলেন। তিনি দশ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.