চার্জ গঠন না হওয়ায় শুরুই হয়নি সাক্ষ্যদান। এরই মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক অভিযুক্তের। শেষ পর্যন্ত, ৩৫ বছর আগের একটি ঘটনায় সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে বাকি দুই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করল আদালত। পুলিশের প্রতি আদালত ক্ষোভ প্রকাশও করে বলে আইনজীবীরা জানান।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাকরে এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ১৯৭৯ সালে কর্তৃপক্ষ খেয়াল করেন, ভল্টে ত্রিশ হাজার টাকা কম রয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ষড়যন্ত্র করে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন অ্যাকাউন্ট্যান্ট রবীন্দ্রনাথ নাগা, কোষাধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন তরফদার ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সুরেন্দ্র সিংহের বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশ থেকে সুরেন্দ্রবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকি দু’জন আত্মসমর্পণ করেন। তিন জনেই জামিন পেয়ে যান। এর পরে সুরেন্দ্রবাবু আর আদালতে হাজির হননি। বাকি দু’জন আদালতে বারবার হাজিরা দিয়েছেন।
অভিযুক্তদের আইনজীবী অসীম ঘটক জানান, পুলিশ কোনও কেস ডায়েরি দাখিল করেনি। আদালত বারবার সুরেন্দ্রবাবুকে হাজির করানোর জন্য ওয়ারেন্ট জারি করেছে। কিন্তু এক বারও তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়নি। এরই মধ্যে বছর চারেক আগে সুরেন্দ্রবাবুর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। অন্য দুই অভিযুক্ত বারবার আদালতে হাজিরা দিয়ে গেলেও ৩৫ বছর পুলিশ কোনও কেস ডায়েরি দাখিল করেনি। ফলে, চার্জ গঠন না হওয়ায় সাক্ষ্যদানও শুরু করা যায়নি। অসীমবাবু জানান, অবশেষে আদালত দুই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করলেন। এত দিন পর হলেও তাঁর মক্কেলরা বেকসুর খালাস হওয়ায় খুশি অসীমবাবু।
পুলিশের একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, চার্জশিট জমা দেওয়ার পরে কিছু দিনের মধ্যে কেস ডায়েরিও জমা দেওয়া হয়েছিল। আদালতে প্রথমে সেই নথি থাকে জিআরও-এর কাছে। তার পরে সেটি থাকে কোর্ট বেঞ্চ ক্লার্কদের কাছে। কোনও কারণে সেখান থেকে কেস ডায়েরি খোয়া গিয়েছে বলে ওই পুলিশ সূত্রের অনুমান। আসানসোল আদালতের আইনজীবী বীরেন মুখোপাধ্যায় অবশ্য জানান, জিআরও-এর কাছে পুলিশের কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার তারিখ নথিভুক্ত থাকার কথা। এই মামলায় সেই তারিখও খুঁজে পাওয়া যায়নি। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (ওয়েস্ট) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আদালতের রায়ের প্রতিলিপি দেখে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। |