পড়াবে কে ঠিক নেই, তবু ২৬ স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম
বাম আমলে ১১টি সরকারি স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান শাখায় ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়েছিল। তার পরে কেটে গিয়েছে চার বছর। কিন্তু এত দিনেও স্কুলগুলি ইংরেজি মাধ্যমের জন্য বাড়তি শিক্ষক পায়নি। এরই মধ্যে ২০১৪-’১৫ শিক্ষাবর্ষে আরও ২৬টি স্কুলে একাদশে বিজ্ঞান শাখায় ইংরেজি মাধ্যম চালু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কিন্তু তার জন্য শিক্ষক মিলবে কী ভাবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
আগের জমানায় যে-সব স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়েছিল, সেখানে নিয়োগের জন্য কয়েক মাস আগে ৪৪টি শিক্ষক-পদের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। কিন্তু এখনও সেই পদে নিয়োগ হয়নি। ওই নিয়োগ হবে পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা পিএসসি মারফত। তাই এই ব্যাপারে আরও বিলম্বের আশঙ্কা করছে স্কুলগুলি। এরই মধ্যে নতুন ২৬টি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমের জন্য ১০৪টি নতুন শিক্ষক-পদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবে সেগুলো পূরণ করা যাবে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির সংশয় কাটছে না। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, খুব শীঘ্রই পাবলিক সার্ভিস কমিশন মারফত নতুন শিক্ষক পেয়ে যাবে ওই সব স্কুল।
২০১০-’১১ শিক্ষাবর্ষে ১১টি সরকারি স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান শাখায় ইংরেজি মাধ্যম চালু করেছিল তখনকার বাম সরকার। পরিকাঠামো এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা না-বাড়িয়ে ইংরেজি মাধ্যম চালু করলেও তা আদৌ সফল ভাবে চলবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। বাস্তবে দেখা গিয়েছে, বরাবরই শিক্ষকের অভাবে রুগ্ণ সরকারি স্কুলগুলি এই বাড়তি ছাত্রছাত্রীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। সরকারি স্কুলগুলিতে এই মুহূর্তে শূন্য পদের সংখ্যা ৩১৪। তা ছাড়া বাংলা মাধ্যমে পড়াতে অভ্যস্ত শিক্ষকদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়াতেও সমস্যা হচ্ছে।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা না-নিয়ে সরকার আরও ২৬টি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম খুলছে কেন?
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের ব্যাখ্যা, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকদের চাহিদার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই তড়িঘড়ি এতগুলি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম খোলার সিদ্ধান্ত কি না, সেই প্রশ্নও অবশ্য উঠছে।
প্রথম বার ইংরেজি মাধ্যম চালু করার আগে স্কুলগুলির কাছ থেকে মতামত চেয়েছিল রাজ্য সরকার। এ বার সেটাও চাওয়া হয়নি। ২৬টি স্কুলকে ইংরেজি মাধ্যম চালু করে দিতে বলা হয়েছে। এই নিয়ে ক্ষোভ জমেছে স্কুলগুলির মধ্যে। ওই ২৬টি স্কুলের মধ্যে হিন্দু, হেয়ার, বিধাননগর, টাকি সরকারি বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক-পদই ফাঁকা। পুরুলিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে বাংলা, ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, প্রাণিবিদ্যা, রাশিবিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স-সহ প্রায় সব বিষয়েই শিক্ষক-পদ খালি পড়ে আছে। সুনীতি অ্যাকাডেমিতে তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে গণিতের মাত্র এক জন শিক্ষক আছেন। এই পরিস্থিতিতে কী করে ইংরেজি মাধ্যমের একটি বিভাগ খুলে বিজ্ঞানের মতো গবেষণাগার-ভিত্তিক বিষয়ে পঠনপাঠন হবে, বুঝতে পারছেন না প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। একাদশে এক-একটি বিভাগে ৫০-৬০ জন পড়ুয়া ভর্তি হন।
যাবতীয় জল্পনা, আশঙ্কা উড়িয়ে ব্রাত্যবাবু অবশ্য বলেন, “পাবলিক সার্ভিস কমিশন আশ্বাস দিয়েছে, অতি দ্রুত বাড়তি পদে শিক্ষক পেয়ে যাবে স্কুলগুলি। সমস্যা হবে না।” স্কুলশিক্ষা কমিশনারকে বাড়তি পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার বন্দোবস্তও হয়ে যাবে বলে আশ্বাস স্কুলশিক্ষা দফতরের। স্কুলগুলি অবশ্য কোনও আশ্বাসেই বিশেষ ভরসা খুঁজে পাচ্ছে না।
সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কিন্তু সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে। সভাপতি দীপক দাস বলেন, “আমরা চাই আরও বেশি করে ইংরেজি মাধ্যম চালু হোক। এর জন্য যথাযথ পরিকাঠামোর বন্দোবস্ত করা দরকার।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.