বামফ্রন্ট প্রার্থী তালিকা আটকে টানাপোড়েনেই
নেক দূর এগিয়েও কিছু টানাপোড়েনে আটকে রয়েছে লোকসভা ভোটে বামফ্রন্টের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার কাজ। তালিকায় সংখ্যালঘু মুখ বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। সেইমতো প্রস্তুতিও এগিয়েছে। কিন্তু তারই পাশাপাশি বর্তমান সাংসদদের ফের প্রার্থী করার নির্দেশিকা ঘিরে তৈরি হয়েছে এক প্রস্ত জটিলতা। প্রাথমিক তালিকা থেকে দু-একটি নাম অদল-বদল ঘটাতে গিয়েও দেখা দিয়েছে টানাপোড়েন।
সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী, সব জেলা কমিটি থেকে সম্ভাব্য নামের তালিকা জমা পড়ছে আলিমুদ্দিনে। দলীয় সূত্রের খবর, দু-একটি জেলা বাদে বাকিদের সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত। এর মধ্যে বেশি গোল বেধেছে বর্ধমানকে নিয়ে। কারণ, ওই জেলার তিন আসনেই এখন সিপিএমের সাংসদ রয়েছেন। জেলা নেতৃত্ব চান, তার মধ্যে অন্তত দু’টি আসনে প্রার্থী বদল করতে। কিন্তু রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সাম্প্রতিক নির্দেশিকা বলছে, শারীরিক কারণে বা গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের খাতিরে একেবারে ব্যতিক্রম না হলে আগের বারের জয়ী সাংসদদের ফের প্রার্থী করতে হবে। এই সূত্র মানতে নারাজ বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব এখনও দর কষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন বলেই আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর।
আবার প্রাথমিক ভাবে নাম ঠিক করে ফেলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি আসন ঘিরে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। অস্বচ্ছ পথে টাকা উপার্জন, দুর্নীতি এবং দল-বিরোধী কাজের অভিযোগে রাজ্য সিপিএম যে তদন্ত কমিটি গড়েছে, তার আওতায় লক্ষ্মণ শেঠ-সহ তাঁর প্রায় সব অনুগামীই এসে যাচ্ছেন! যার ফলে প্রায় গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্বকে নিয়েই এখন দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। এমতাবস্থায় প্রাথমিক ভাবে পেশ-হওয়া প্রার্থীদের নাম নিয়েও যারপরনাই চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরের একটি মাত্র আসনে দলের কোনও রাজ্য নেতাকে প্রার্থী করা হবে, নাকি জেলা থেকেই কেউ দাঁড়াবেন সেই প্রশ্ন নিয়েও শেষ লগ্নে টানাপোড়েন বেধেছে। দক্ষিণবঙ্গের এক জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিজে লোকসভায় প্রার্থী হতে চান। কিন্তু তিনি জিতে গেলে জেলার সংগঠনের কাজ কী ভাবে চলবে, সেই প্রশ্ন তুলছে দলেরই একাংশ। তবে সিপিএম সূত্রের ইঙ্গিত, ওই জেলা সম্পাদকের শেষ পর্যন্ত রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সবুজ সঙ্কেত পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। সেখানেও জেলা সিপিএমের মধ্যে প্রশ্ন, তুলনায় সাংগঠনিক ভাবে কম দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও ওই জেলা সম্পাদকের পাশের কেন্দ্রে এক প্রাক্তন সাংসদের (যিনি এখনও বয়সে তরুণ) নাম কেন তালিকায় থাকছে না?
যুক্তি-পাল্টা যুক্তি মিটিয়ে দ্রুতই এখন কাজ শেষ করতে চাইছে আলিমুদ্দিন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দিকের ঝাড়াই-বাছাই শেষ করে ফেলার চেষ্টা চলছে।” বাম শরিকদের মধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লকের তিন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত। সিপিআইয়ের দু’টি কেন্দ্র ঠিক হয়ে গিয়েছে। শুধু ঘাটাল নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বার্তা আসার অপেক্ষা।
আর এক শরিক আরএসপি জেতা আসন আলিপুরদুয়ারে মনোহর তিরকিকে বদলাচ্ছে না। বহরমপুরেও বহাল থাকছেন পুরনো প্রার্থী প্রমথেশ মুখোপাধ্যায়। জয়নগরে নতুন প্রার্থী হতে চলেছেন বর্ষীয়ান বিধায়ক সুভাষ নস্কর। তবে বালুরঘাটের বর্তমান সাংসদ প্রশান্ত মজুমদার আর টিকিট পাবেন না বলে ঠিক হলেও তাঁর বিকল্প নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আরএসপি-র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কমিটির এক নেতার মনোনয়নের সম্ভাবনা সেখানে বেশি। সিপিএমের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, “তালিকায় পুরনো-নতুন মিলে ভারসাম্য থাকবে। তবে একেবারে আনকোরা মুখ সম্ভবত খুব বেশি থাকবে না।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির রূপরেখাও লোকসভার ময়দানে নতুন কিন্তু রাজনীতির আঙিনায় পরিচিত মুখদের এনে ভারসাম্যের কথাই বলেছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.