রাজ্য টেনিস সংস্থার (বিটিএ) ব্যালকনিতে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের পাশে বসে সোমদেব দেববর্মন দেখছিলেন বোজোলিয়াকের কলকাতা চ্যালেঞ্জার জয়। তার চেয়েও বোধহয় বেশি অনুভব করছিলেন শনিবার ফাইনালে দীর্ঘদেহী, সুদর্শন, গ্যালারি নিতে জানা সার্বিয়ানের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ডনস্কয়ের মাত্র ৫৮ মিনিটেই আত্মসমর্পণকে। ১-৬, ১-৬। শেষমেশ লাঞ্চ টেবলে জয়দীপকে বলেই ফেলেন, “এর অর্ধেক খারাপও যদি ডনস্কয় আমার সঙ্গে আগের দিন সেমিফাইনালে খেলত!” চ্যাম্পিয়নের ১১টা ‘এস’-এর পাশে রানার্সের ৫টা সার্ভিস ব্রেক ও অগুণতি আনফোসর্ড এররের কথা ভাবলে সোমদেবকে ‘হতভাগ্য’ মনে হতেই পারে।
এক দিন বাদে দিল্লি চ্যালেঞ্জারে শীর্ষ বাছাই হিসেবে খেলতে সন্ধের ফ্লাইটে রাজধানী গেলেন সোমদেব। বলে গেলেন, “ওখানে ট্রফি জেতার আপ্রাণ চেষ্টা করব। তা হলে তার কিছু দিনের মধ্যে কঠিন অ্যাওয়ে ডেভিস কাপের জন্য বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাব।” দক্ষিণ কোরিয়াকে তাদের দেশের কোর্টে কখনও হারাতে পারেনি ভারত। তা সত্ত্বেও এ বার এপ্রিলে সেই খারাপ রেকর্ড মুছতে আত্মবিশ্বাসী ভারতের এক নম্বর সিঙ্গলস তারকা। “কোরিয়ায় এ বার আমাদের দলে দু’জন ভাল সিঙ্গলস প্লেয়ার থাকবে। ধরা যায় য়ুকি আর আমি সিঙ্গলসে খেলব। আর ডাবলসে আমরা সব সময় ওদের চেয়ে এগিয়ে। শুধু প্রার্থনা করব, টাইয়ের সপ্তাহটায় যেন আমরা সবাই শারীরিক-মানসিক ভাবে একশো ভাগ সুস্থ থাকি আর ফর্মে থাকতে পারি।”
কিন্তু সত্যিই কি ডেভিস কাপে লিয়েন্ডার-মহেশকে আর দরকার নেই ভারতের? “ভারতীয় টেনিসে ওদের অবদানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তবে এই মুহূর্তে আমাদের আরও কয়েকটা ভাল জুটি আছে। বপস্ (বোপান্না) টপ-ক্লাস ডাবলস স্পেশ্যালিস্ট। ওর বিশ্ব র্যাঙ্কিংই ভারতীয়দের মধ্যে সেরা। কলকাতায় রানার্স বিষ্ণু-দ্বিবীজ জুড়ি ডেভিস কাপ জিতেছে। দিল্লি চ্যালেঞ্জারে আবার দ্বিবীজ-পূরব জুড়ি বাঁধছে। ওদের এটিপি খেতাব আছে। কলকাতায় সাকেত-সনম জুড়িও ওদের প্রথম চ্যালেঞ্জার খেতাব জিতল। সব মিলিয়ে ডাবলসের ছবিটা বেশ হেলদি-ই,” বললেন সোমদেব।
ভারতীয় টেনিস প্রশাসনের ছবিটা কি একই রকমের ‘হেলদি’? ভারতীয় টেনিস প্লেয়ার সংস্থার (আইটিপিএ) অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট সোমদেব বলেন, “অবশ্যই। এআইটিএ ভাল কিছু করলে প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রথম, যারা পাশে থাকবে। আমাদের হায়দরাবাদের ক্যাম্পে এআইটিএ ফিজিও পাঠিয়েছিল। অন্য দিকে, আইটিপিএ প্রথম বছরেই তিনটে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। সানিয়া মির্জার অ্যাকাডেমিতে প্রি-সিজন কোচিং ক্যাম্প। ফান্ড রেইজিং টুর্নামেন্ট করে ২০-২৫ লাখের তহবিল। আর আটটা টুর্নামেন্টের মিনি ট্যুর-ক্যালেন্ডার। দেশের প্রতিশ্রুতিমান প্লেয়াররা যাতে বেশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পায়। সব মিলিয়ে ভারতীয় টেনিস ঠিক দিকে এগোচ্ছে মনে হয়।” |