দান-খয়রাতির চাল-টাকার জোগান নেই পঞ্চায়েতে
অসহায় হতদরিদ্র বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা
গ্রাম পঞ্চায়েতে সীমিত কোটা। বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে ত্রাণের চাল-টাকা নেই। ফলে দু’মাস ধরে অসহায় দিন কাটছে নয়ন বর্মন, শেফালি সরকার, অক্ষয় সরকার বা, নিভা মোহান্তের মত অসহায় হতদরিদ্র বৃদ্ধবৃদ্ধাদের। বালুরঘাট ব্লকের বাসিন্দা ওই সমস্ত বৃদ্ধবৃদ্ধারা সহায়তার আশায় বিডিও দফতরে এসে ঘুরে যাচ্ছেন। আপৎকালীন খয়রাতির শস্যও মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রায় দু’মাস ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ৮টি বিডিও অফিসে স্পেশাল জিআরে (গ্র্যাসুইসাস রিলিফ) চালের বরাদ্দ না থাকায় সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে। বালুরঘাটের বিডিও শুভ্রজিৎ গুপ্ত বলেন, “ব্লক কার্যালয় থেকে এ ধরনের অসহায় মানুষদের চটজলদি সহায়তার জন্য মাথা-পিছু ১২ কেজি চাল দেওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। চাল না থাকলে জনপ্রতি নগদ ১২০ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়। আমাদের কাছে চালের মজুত ফুরিয়ে গিয়েছে। ত্রাণের নগদ টাকাও নেই। মহকুমাশাসককে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে।”
ব্লক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের অফিসার জয়দীপ দাশগুপ্ত বলেছেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে ওই খাতে জিআরে চালের বরাদ্দ মেলে। সেখান থেকেই ব্লক অফিসের দ্বারস্থ অসহায় ব্যক্তিদের চাল দিয়ে সাহায্য করা হয়। গত বছরের মার্চে ৪০ কুইন্টাল চালের বরাদ্দ মেলে। তা দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত চালানো হয়। এর পর নতুন বরাদ্দ আসেনি। শাড়ি, কম্বল ছাড়া খাদ্যশস্য দেওয়া যাচ্ছে না।” নগদ জিআরের জন্য দু’দফায় বরাদ্দ ৬০,৪০০ টাকাও মিলছে না ট্রেজারি থেকে। ওই টাকার চেক পাশ হয়নি। মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত এ প্রসঙ্গে বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।”
ভাটপাড়ার পালপাড়ার বৃদ্ধ নয়ন বর্মন, তাঁর স্ত্রী কর্পূরীদেবী চরম দুর্দশায় পড়েছেন। দুই মজুর ছেলে আলাদা থাকেন। এক টুকরো খাস জমির উপর কুঁড়েতে ঠান্ডায় কষ্ট পেলেও পাননি ইন্দিরা আবাসের পাকা ঘর, বিপিএল কার্ড থেকে শুরু করে রেশনের সস্তার চাল। বৃদ্ধা বলেন, “বাড়ি বাড়ি মুড়ি, খই ভেজে কিছু টাকা রোজগার হয়। তবে বেশির ভাগ দিন আধপেটা খেয়ে থাকতে হয়।” সাহায্য চেয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে বেশ কয়েক বার ঘোরার পরে সম্প্রতি বিডিও শুভ্রজিৎবাবু ওই দরিদ্র দম্পতিকে বিশেষ ভাবে নগদ জিআরে ২৪০ টাকা সাহায্য করেছেন।
কিন্তু গত এক মাস সাহায্য পাননি বালুরঘাট ব্লকের হোসেনপুর এলাকার অসহায় বিধবা বৃ্দ্ধা শেফালি সরকার, বালুরঘাটে অমৃতখন্ডের হোসেনপুরের হতদরিদ্র ৭০ বছরের নিভা মোহান্ত বা বাদামাইল এলাকার ৭৪ বছরের বৃদ্ধ অক্ষয় সরকার। ব্লকে ১১টি পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় তৃণমূল। তারমধ্যে চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪৩ জন, পতিরামে ৫০ জন, ভাটপাড়ায় ৫৬ জন, বোল্লায় ৬৪ জন প্রতি মাসে জিআরে ১২ কেজি করে চাল পান।
বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি প্রবীর রায় বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে অসহায় গরিব মানুষকে সাধারণ জিআরের মাধ্যমে ১২ কেজি চাল সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তালিকা নির্দিষ্ট থাকায় তার বাইরে অসহায় মানুষকে গ্রামপঞ্চায়েত থেকে ওই সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া ব্লকেও চাল মজুত নেই। চালের বরাদ্দ বৃদ্ধিতে উপর মহলে দরবার করব।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.