ছয় বছর আগে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে মজে যাওয়া নদী খননের কাজ শুরু করেছিলেন ময়নাগুড়ি ব্লকের খাগরাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। শুরুতে বিতর্ক দেখা দিলেও সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পরে এ বার ওই কাজকে মডেল করে জেলা জুড়ে নদী ও ঝোরা সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছেন জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ তথা একশো দিনের কাজ প্রকল্পের কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে ডুয়ার্সের কয়েকটি ঝোরা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার থেকে ওই প্রকল্পের মাধ্যমে ফের জরদা নদী সংস্কারের কাজ শুরু করেছে ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত। এপ্রিল মাস পর্যন্ত ওই কাজ চলবে।
প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিক সমীরণ মণ্ডল বলেন, “১৩টি ঝোরা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আরও ২০টি চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আগে ময়নাগুড়ি ব্লকের জরদা নদীতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সংস্কার হলেও জেলার অন্য কোথাও হয়নি।” ঝোরা ও নদী খনন, বাঁধ মেরামতের কাজের জন্য সেচ দফতরে ৫ কোটি টাকার প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা প্রকল্পগুলি খতিয়ে দেখছেন। প্রাথমিক ভাবে যে ৩৩টি ঝোরা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে জেলায় ৪৫ হাজার শ্রমদিবস সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ফি বছর বর্ষায় ফুঁসে ওঠা ঝোরার জলোচ্ছ্বাসে যে ভাবে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়, সেটাও অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে, শুখা মরসুমে সেচের সুযোগও মিলতে পারে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। |
২০০৮ সালে ময়নাগুড়ি ব্লকের খাগরাবাড়ি-১পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জরদা নদী খননের কাজ শুরু করেন। ওই সময় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে নদী সংস্কারের কাজ করা যায় কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের গবেষক এবং নদী বিশেষজ্ঞরা ওই কাজ ঘুরে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা জানান, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার অনেক ছোট ও মাঝারি নদীকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পর পর কয়েক বছর ময়নাগুড়িতে নদী খনন কাজে সাফল্য দেখে জেলা স্তরে আলোচনা হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনাও করা হয়। সব দিক খতিয়ে দেখার পরে মালবাজার মহকুমা এবং ময়নাগুড়ি, ফালাকাটা, কালচিনি ও মাদারিহাট ব্লকের মজে যাওয়া ছোট নদী ও ঝোরা সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। মালবাজার মহকুমাতেই ১২টি ঝোরা সংস্কার করা হবে। ইতিমধ্যেই ওই কাজ শুরু হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। |