লাভপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবের পাঠানো রিপোর্টও পুরোপুরি সন্তুষ্ট করতে পারল না সুপ্রিম কোর্টকে। ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মামলার কেস ডায়েরি, ফরেন্সিক রিপোর্ট, তদন্তের বর্তমান অবস্থা, নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্য সরকার কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ আশা করে।
লাভপুর-মামলায় অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল সিদ্ধার্থ লুথরাকে আদালত-বান্ধব হিসেবে নিয়োগ করেছে বেঞ্চ। লাভপুরে সালিশি সভা বসিয়ে ২০ বছরের এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করেছিল। বীরভূমের জেলা জজের কাছে কোর্ট প্রথমে রিপোর্ট চায়। তাতে পুলিশ ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়ে পুরো তথ্য না থাকায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবের রিপোর্ট তলব করে শীর্ষ আদালত।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের পাঠানো চার পৃষ্ঠার রিপোর্ট এসে পৌঁছয় সুপ্রিম কোর্টে। আজ প্রধান বিচারপতি সদাশিবম ও বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ সেই রিপোর্ট পড়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেনি। সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া মুখ্যসচিবের রিপোর্টে বলা হয়েছে, লাভপুরের ওই ঘটনায় ১৩ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে। রাজ্য সরকারের আইনজীবী অনীপ সাচতেকে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, এফআইআর বা কেস ডায়েরি ও অন্যান্য রিপোর্ট বাংলায় লেখা থাকলে, তা ইংরেজিতে তর্জমা করে আদালতে পেশ করতে হবে। আগামী ৪ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ৩ মার্চের মধ্যে রাজ্য সরকারকে যাবতীয় রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে।
আজ এজলাসে এই মামলাটি উঠলে প্রধান বিচারপতি সদাশিবম বিচারপতি গগৈয়ের সঙ্গে মুখ্যসচিবের রিপোর্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধান অভিযুক্ত, কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কী মামলা করা হয়েছে, তা নিয়ে দু’জনের আলোচনা হয়। ওই ঘটনায় প্রথমে যিনি তদন্তকারী অফিসার ছিলেন, সেই লাভপুর থানার সাব-ইনস্পেক্টর বাহাদুর মণ্ডলকে যে গাফিলতির অভিযোগে তদন্তের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়, তারও উল্লেখ রয়েছে মুখ্যসচিবের রিপোর্টে। এই বিষয়টি নিয়েও বিচারপতিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। তার পরে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমাদের মনে হচ্ছে ওরা কিছু পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু আরও বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।” |
