বাপেরবাড়ি থেকে মোটরবাইক আনতে না পারায় নির্যাতন চালিয়ে এক বধূকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার গোপালনগর থানার পুলিশ কামদেবপুর এলাকার বাসিন্দা ওই তিন জনকে ধরে।
মৃতার নাম শিপ্রা সরকার (১৮)। তাঁর বাবা কুমারেশ সরকার জানিয়েছেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ তিনি ফোনে খবর পান, মেয়ে অসুস্থ হয়ে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি। পর দিন ভোরে তাঁরা হাসপাতালে এসে জানতে পারেন, মেয়ে মারা গিয়েছে। তার পরেই থানায় শিপ্রার শ্বশুরবাড়ির তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ শিপ্রার স্বামী মনোতোষ, শ্বশুর আশুতোষ সরকার এবং শাশুড়ি করুণা সরকারকে ধরে। পুলিশের অনুমান, কীটনাশক খেয়ে শিপ্রা আত্মঘাতী হন।
মাস কয়েক আগে নদিয়ার কোতোয়ালির ধর্মদহ এলাকার বাসিন্দা শিপ্রার সঙ্গে বিয়ে হয় মনোতোষের। বধূর পরিবারের দাবি, বিয়েতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির দাবিমতো সোনার গয়না, আসবাব ও নগদ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছিল। থানায় লিখিত অভিযোগে কুমারেশবাবু জানিয়েছেন, বিয়ের কিছু দিন পর থেকে বাপেরবাড়ি থেকে মোটরবাইক নিয়ে আসার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়ের উপরে চাপ দিতে থাকে। না আনতে পারায় মেয়ের উপরে নির্যাতন বাড়ানো হয়। তার জেরেই মেয়ে আত্মঘাতী হয়।
কুমারেশবাবু বলেন, “মেয়ে বাইকের কথা বলেছিল। কিন্তু আমার অবস্থা ভাল না হওয়ায় দিতে পারিনি। মেয়ের শ্বশুরকে তা জানিয়েও ছিলাম। কিন্তু ওরা নির্যাতন বাড়িয়ে দিল।”
অন্য দিকে, বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনতে না পারায় ওই থানা এলাকারই চক-চৌবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা শিবানী দেবনাথ (২৮) নামে এক বধূর মৃত্যুতেও আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী-সহ তাঁর শ্বশুরবাড়ির পাঁচ জনের বিরুদ্ধে। গত ১৫ জানুয়ারি ওই বধূ মারা যান। আড়াই বছর আগে ওই গ্রামের গৌতম দেবনাথের সঙ্গে বিয়ে হয় নবদ্বীপের কাঁঠালবাগানের বাসিন্দা শিবানীর। পুলিশের অনুমান, গায়ে আগুন লাগিয়ে শিবানী আত্মঘাতী হন। কিন্তু এখনও অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিবানীর বাপেরবাড়ির লোকজন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। |