সময়মতো ট্রেন চলাচলের দাবিতে শুক্রবার প্রায় তিন ঘণ্টা শান্তিপুর স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করলেন যাত্রীরা। আর তার ফলে চরম হয়রান হতে হল সাধারণ মানুষকে। শান্তিপুর স্টেশন ম্যানেজার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময়মতো ট্রেন চলাচলের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ উঠে যায়। অবরোধের ফলে শান্তিপুর স্টেশনে আটকে ছিল কৃষ্ণনগর-শিয়ালদহ ভায়া শান্তিপুর লোকাল, শান্তিপুর-বনগাঁ লোকাল আর স্টেশনে ঢোকার আগে রেলগেটে আটকে দেওয়া হয় শিয়ালদহ থেকে শান্তিপুরগামী ট্রেনটি। ফলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে পুলিশ শান্তিপুরের বাইরে একটি বাইপাস দিয়ে গাড়ি পাশ করিয়ে দেওয়ায় যান চলাচল
স্বাভাবিক হয়।
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, এদিন সকাল ৮-৫০ থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধের ফলে শিয়ালদহ-শান্তিপুর শাখার চারটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে দুটি ট্রেনের যাত্রাপথও। অবরোধকারীদের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরেই শান্তিপুর শাখায় বেশিরভাগ ট্রেন সময়মতো চলাচল করছে না। নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে বেশিরভাগ ট্রেন চলছে। ফলে নিত্যদিন চরম হয়রান হতে হচ্ছে যাত্রীদের। শুক্রবার সকাল ৮-৪৫ মিনিটে শিয়ালদহগামী যে ট্রেনটির শান্তিপুর স্টেশন থেকে ছাড়ার কথা সেটি প্রায় ৪৫ মিনিট দেরিতে আসায় যাত্রীদের দাবি ছিল বনগাঁগামী ট্রেনটিকে শিয়ালদহ শাখায় চালাতে হবে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি না হওয়ায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। |
রেল আটকে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র। |
নিত্যযাত্রী বাপি সাহা, বাবাই দত্তরা বলেন, “এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। প্রায় প্রতিদিনই শান্তিপুর শাখার একাধিক ট্রেন দেরিতে চলাচল করছে। শুক্রবার ৮-৪৫ মিনিটে যে ট্রেনটির শান্তিপুর থেকে ছাড়ার কথা সেই ট্রেনটি তখন পায়রাডাঙা থেকে শান্তিপুরের দিকে আসছে। দাবি ছিল, স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা বনগাঁ লোকালটিকে শিয়ালদহ যেতে হবে। রেল কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হয়নি।”
আর এ দিনের অবরোধের মুখে পড়ে হয়রান হতে হয়েছে বনগাঁ ও শিয়ালদহ শাখার যাত্রীদের। অবরোধের মধ্যে আটকে পড়ে তিনটে লোকাল ট্রেন। মাকে নিয়ে কলকাতায় চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন হরিপুর এলাকার বাসিন্দা সরোজ মণ্ডল। তিনি বলেন, “মায়ের শ্বাসকষ্টের সমস্যা। এই সময় সেটা আরও বেড়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় মাতে প্রায় তিন ঘণ্টা স্টেশনে শুইয়ে রাখতে হয়েছে। মা খুবই কষ্ট পেয়েছেন।”
শান্তিপুর স্টেশন ম্যানেজার অচিন্ত্য রায় বলেন, “আমি কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। বনগাঁগামী ট্রেনের চালক ও গার্ডের কেবলমাত্র ওই শাখারই ‘লার্নিং সার্টিফিকেট’ থাকায় তাঁদের পক্ষে শিয়ালদহ যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাছাড়া টিটাগড়ে একটু সমস্যা থাকায় এদিন ট্রেন একটু দেরিতেই এসেছিল।” পূর্ব রেলের সিনিয়র জনসংযোগ আধিকারিক অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সবসময় চেষ্টা করি সময়মতো ট্রেন চালানোর। নানা কারণে কখনও কখনও সেটা ব্যাহত হয়। তবে শান্তিপুর শাখায় ট্রেন যাতে ঠিক সময়ে চলাচল করে তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |