বোমা ফেটে জখম ছাত্র এখনও পুরোপুরি বিপন্মুক্ত নয় বলে জানাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বৃহষ্পতিবার সকালে খানাকুলের খুনিয়াচক জুনিয়র হাইস্কুলের ছাদে রাখা বোমা ফেটে জখম হয় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শেখ আনারুল। ডান চোখে আঘাত লাগে তার। ক্লাস শুরুর আগে আনারুল এবং তার আরও দুই বন্ধু স্কুলের ছাদে খেলা করছিল। বোমা দেখে স্বভাবতই বুঝতে পারেনি তারা। নাড়াচাড়া করার সময়ে সেটি ফেটে যায়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ছেলেটির চোখের আঘাত গুরুতর। এখনও রক্ত জমে আছে। শরীরের নানা জায়গায় আঘাত লেগেছে। ঘটনার পরে, বৃহস্পতিবারই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল আনারুলকে। শুক্রবার বিকেলে তার বাবা শেখ আসারত জানান, ছেলের চোখের মণির কাছে এখনও লাল হয়ে আছে। ওষুধ চলছে। চিকিৎসকেরা মাঝে মাঝেই তার দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করে দেখছেন। যদিও বাবা বলেন, “ছেলে এখনও পরিস্কার দেখতে পাচ্ছে না। চোখের মণির কাছে জমাট বাঁধা রক্ত সরাতে অস্ত্রোপ্রচার হতে পারে বলে শুনছি।”
এ দিকে, স্কুল চত্বরে বোমা ফেটে ছাত্র জখম হওয়ার ঘটনায় ধৃত প্রধান শিক্ষককে ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আরামবাগ আদালত। দুষ্কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন প্রধান শিক্ষক তথা সিপিএমের খানাকুল জোনাল কমিটির সদস্য নীলরতন দলুই। তাঁকে মারধর করে এলাকার লোকজন তুলে দেয় পুলিশের হাতে। এ দিন আরামবাগ আদালতে হাজির করানো হয় তাঁকে। বিচারকক্ষ থেকে বেরিয়ে পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে তিনি এলাকার লোকজনের থেকে জানতে চান, কেমন আছে জখম ছাত্রটি। উত্তর মেলে, ভাল। নীলরতনবাবুর দাবি, তৃণমূল চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসিয়েছে। মারধরও করেছে।
প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা নিয়ে আনারুলের বাবার প্রতিক্রিয়া, “আমি রুটির দোকানে কাজ করে সংসার চালাই। এ সব জটিলতা নিয়ে কিছু বলতে পারব না। যা করেছে স্কুল পরিচালন কমিটি করেছে।”
স্কুল পরিচালন কমিটির তরফেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বোমা রাখার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও পরিচালন কমিটির সদস্য দুধকুমার সামন্ত বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা একরকম নিশ্চিত। ওই প্রধান শিক্ষক এর আগেও নানা গোলমালে জড়িয়েছেন।” যদিও অভিভাবক ও স্কুল পরিচালন কমিটির একাংশের মতে, “নীলরতনবাবুকে ফাঁসানো হয়েছে। কোনও প্রধান শিক্ষক স্কুলে ছাদে কেন বোমা রাখতে রাখতে যাবেন, তাই মাথায় ঢুকছে না।” সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক মনীন্দ্র রানাও বলেন, “মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে আমরা পুলিশকে স্মারকলিপি দিয়েছি। তদন্ত করে দেখা হোক, কে বা কারা প্রকৃত দোষী।” |