শিয়রে জলাধার, শঙ্কায় দিন গুনছে দমকলই
দ্ধারের আশায় দিন গুনছেন উদ্ধারকারীরাই!
এমনই অবস্থা হাওড়ার গোলমোহরের কাছে অবস্থিত দমকলের তিন জেলার সদর দফতরের কর্মীদের। কারণ, দফতরের ১০ মিটারের মধ্যেই থাকা ৬০ ফুট উঁচু সাড়ে ৪ লক্ষ লিটার জলাধারণে সক্ষম একটি জরাজীর্ণ জলাধার।
গত ২৬ বছর ধরে বাতিল হয়ে পড়ে থাকা নির্জলা এই দৈত্যাকার জলাধারটির ভগ্নপ্রায় অবস্থা। দমকল দফতরের কর্মীদের আশঙ্কা, যে কোনও দিন জলাধারটি ভেঙে পড়তে পারে। এতে দমকলের বাড়িটি ক্ষতির পাশাপাশি প্রানহানিও হতে পারে। অভিযোগ, প্রায় প্রতি দিনই সিমেন্টের বড়বড় চাঙড় খসে পড়ছে জলাধারটি থেকে। বিশালাকার জলাধারটি যে সিমেন্টের স্তম্ভগুলির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই স্তম্ভগুলিও ভগ্নপ্রায়। স্তম্ভগুলি থেকে বেরিয়ে আসা লোহার রড চুরি হয়ে যাচ্ছে। দমকলের অভিযোগ, গত পাঁচ বছর ধরে এই জলাধারটি ভেঙে ফেলার জন্য হাওড়া পুরসভাকে বার বার জানান হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।
গোলমোহরের এই সেই জলাধার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
হাওড়ার ডিভিশন্যাল ফায়ার অফিসার সমীর চৌধুরী বলেন, “গত পাঁচ বছর ধরে আমরা দফায় দফায় তৎকালীন বাম পুরবোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। পুরসভা এক বার তদন্তকারী দলও পাঠিয়েছিল। কিন্তু তার পরে কিছুই হয়নি। আমরা বর্তমান মেয়রের কাছেও অবিলম্বে জলাধারটি ভেঙে ফেলতে আবেদন করব।” হাওড়া পুরসভার নতুন তৃণমূল বোর্ডের চেয়ারম্যান রথীন চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের বোর্ড গঠন হওয়ার পরে দমকলের থেকে আমাদের কাছে অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগের পুরবোর্ড কোনও ব্যবস্থা না করে থাকলে দায় সেই পুরবোর্ডের উপরেই বর্তাবে।”
শুধু এই জলাধারটিই নয়, হাওড়ায় আরও ১১টি এলাকায় এমনই জরাজীর্ণ জলাধার রয়েছে বলে পুরবাসীর অভিযোগ। অভিযোগ, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অনেকখানি জায়গা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকা পুরসভার এই বাতিল জলাধারগুলি কার্যত মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া পুর এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের জন্য ১৭টি এলাকায় ১৭টি জলাধার তৈরি করেছিল রাজ্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। জলাধারগুলির নীচে থাকা পাম্পিং স্টেশন থেকে জল পাম্প করে তোলা হত। সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হত। কিন্তু ১৯৮৭-এ পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প তৈরি হওয়ার পরে এই জলাধারগুলি বাতিল বলে ঘোষণা করে পুরসভা। ফলে সেখান থেকে সব কর্মী সরিয়ে দেওয়া হয়। বছরের পরে বছর এ ভাবে পড়ে থাকায় চুরি হয়ে যায় জলাধারের পাইপ ও পাম্প হাউসের যন্ত্রাংশ।
এর মধ্যে একটি জলাধার হল দমকল দফতরের কাছের জলাধারটি। জিটি রোড়ে দমকল ভবনের পাশেই প্রায় ১৫ কাঠা জায়গার উপর তৈরি হয়েছিল পাম্পিং স্টেশনটি। অভিযোগ, শহরের মধ্যে খাটাল নিষিদ্ধ হলেও জলাধারের জমির পাশেই রমরমিয়ে চলছে খাটাল।
হাওড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অফিসার ও কর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের অফিস ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। থাকেন অফিসার ও কর্মীরা। আচমকা যদি ওই জলাধারটি ভেঙে পড়ে তা হলে শুধু প্রাণহানিই হবে না, হাওড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের দমকলের সদর দফতর অকেজো হয়ে পড়বে। দমকল পরিষেবা ব্যহত হবে। দমকলের অফিসার পুলক শর্মা বলেন, “আমরা দুর্ঘটনাগ্রস্থ মানুষকে উদ্ধার করি। জলাধারটির যা অবস্থা, এখন আমরাই উদ্ধারের আশায় দিন গুনছি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.