অচল হাইড্র্যান্ট, আগুন নেভাতে ভরসা নলকূপই
কৌশিক ঘোষ |
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পলি জমে নষ্ট হয়েছে হাইড্র্যান্ট। বহু জায়গায় আগুন নেভাতে জল পাচ্ছে না দমকল। অগত্যা গভীর নলকূপ থেকে জল নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দমকল।
রাজ্য দমকল ও পুরসভার একটি যৌথ সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, কলকাতার অধিকাংশ হাইড্র্যান্টগুলির খারাপ অবস্থা। হাইড্র্যান্টের স্ট্যান্ডপোস্টগুলি ভেঙে যাওয়ায় জল পেতে সমস্যা হচ্ছে। দমকল কর্তৃপক্ষ জানান, শহরের বেশির ভাগ হাইড্রান্ট অকেজো। তার ফলে দমকল প্রয়োজনে জল পাচ্ছে না। |
|
খিদিরপুর অরফ্যানগঞ্জ বাজারে বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য। |
রাজ্যের দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, “আগুন নেভাতে সব সময় যাতে জল পাওয়া যায় তাই শহরের বিভিন্ন প্রান্তের গভীর নলকূপগুলিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই দমকল দফতর ৮০টিরও বেশি গভীর নলকূপ সারিয়ে তুলেছে।” তিন বছর আগে নন্দরাম মার্কেটে আগুন নেভানোর সময়ে ওই অঞ্চলের কোনও হাইড্র্যান্ট থেকে জল পাওয়া যায়নি। তখন কলকাতা পুরসভা মল্লিকঘাট পাম্পিং স্টেশন থেকে একটি বিশেষ পাইপলাইনের ব্যবস্থা করে দেওয়ায় দমকলের সুবিধা হয়েছিল। এ ছাড়া বেশির ভাগ সময়েই দমকলকে লালদিঘি থেকে অথবা মল্লিকঘাট পাম্পিং স্টেশন থেকে রিলে পদ্ধতিতে জল আনতে হয়।
যে সব হাইড্র্যান্টের স্ট্যান্ডপোস্ট ভেঙে গিয়েছে সেগুলি পুরসভা মেরামত করেনি কেন? পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “খবর পাওয়ার পর দু’-চার বার মেরামতি করা হয়েছে। কিন্তু তার পরে আবার সেগুলি ভেঙে গিয়েছে। গাড়ি পার্ক করার সময়ে রাস্তার ধারের এই স্ট্যান্ডপোস্টগুলিতে ধাক্কা লেগে কিছু স্ট্যান্ডপোস্ট ভেঙে গিয়েছে। স্ট্যান্ডপোস্ট ঠিক আছে কি না তা দেখার পরিকাঠামো পুরসভার নেই।” |
|
বিভাসবাবু আরও জানান, হাইড্র্যান্টের লাইনে পলি জমার ফলে নিকটবর্তী পাম্পিং স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল সব সময় পাওয়া যায় না। ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনগুলির পলি পরিষ্কার না করা পর্যন্ত এই হাইড্র্যান্ট চালু হবে না। এই ভূগর্ভস্থ লাইন ঠিক করে আবার হাইড্র্যান্ট চালু করা সময়সাপেক্ষ এবং খরচও অনেক বেশি।
পুরসভা দমকলকে আগের সমীক্ষার যে রিপোর্ট দিয়েছিল তাতে বলা হয়েছিল শহরের বেশ কিছু পার্কে ভূগর্ভস্থ জলাধারের ব্যবস্থা আছে। প্রয়োজনে দমকল এই সব পার্কের জলাধার থেকেও জল ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, জলাধারগুলি শুকিয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে, দমকল দফতর পুরসভাকে রাস্তায় প্রতি ২০০ মিটার অন্তর হাইড্র্যান্ট তৈরি করার প্রস্তাব দিয়েছিল। তাও বাস্তবায়িত হয়নি। আগুন মোকাবিলায় দমকল, পুরসভার ১৫টি পাম্পিং স্টেশন থেকে রিলে পদ্ধতিতে জল নেওয়া শুরু করে। প্রশ্ন ওঠে কাছে পাম্পিং স্টেশন না থাকলে কী হবে? তার পরে গভীর নলকূপ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। যেখানে নলকূপ নেই সেখানে নতুন নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।দমকলমন্ত্রী বলেন, “কলকাতা পুরসভার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। পুরসভার বাজার ছাড়া কোন বরোয় ক’টি নলকূপ রয়েছে তার সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে সমস্যার অনেক সুরাহা হবে।” |
|