|
|
|
|
কাজের দিনে মিছিলের ফাঁসে ফের নাভিশ্বাস
নিজস্ব সংবাদদাতা |
শহরের প্রাণকেন্দ্রে দু’টি সভা। শহর জুড়ে দু’টি ধর্মীয় সংগঠনের মিছিল। সব মিলিয়ে কাজের দিনে ফের নাকাল শহরবাসী। শুক্রবার দুপুরে যত না যানজট হয়েছে, বিকেলে তা ছড়িয়ে গিয়েছে আরও বেশি। ফলে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে ঘাম ছুটেছে অফিসফেরত মানুষদের।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে ধর্মতলার ওয়াই রোডে গ্রন্থাগার কর্মীদের একটি সংগঠনের জমায়েত ছিল। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সভা ছিল একটি ধর্মীয় সংগঠনের। বিকেলে ওয়াই রোডে ফের জমায়েত করেন বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট ও আমানতকারীরা। অন্য দিকে, দুপুরে তিলজলা থেকে একটি ধর্মীয় সংগঠনের শোভাযাত্রা শহরের গুরুত্বপূর্ণ ১৭টি জায়গা ঘুরে তিলজলায় ফিরে যায়। দলে দলে লোক ওই শোভাযাত্রায় যোগ দেন। তার জেরেই এ দিন ধর্মতলা-সহ বিভিন্ন প্রান্তে যানজট হয়। আগাম পুলিশি ব্যবস্থা সত্ত্বেও শহরবাসীকে নাকাল হতে হয়েছে। |
|
মিছিলে অবরুদ্ধ ধর্মতলা মোড়। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র। |
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে জমায়েতের কারণে দুপুর থেকে ওই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গাড়িগুলি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় নিউ রোড, মেয়ো রোড দিয়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সভায় হাজার ছয়েক লোক এসেছিলেন। বিকেল তিনটে নাগাদ কলেজ স্ট্রিট থেকে অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টদের মিছিল নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, ওয়েলিংটন স্কোয়ার, এস এন ব্যানার্জি রোড হয়ে পৌঁছয় ধর্মতলায়। পুলিশের দাবি, ওই মিছিলের জেরে যানজট হয় মধ্য কলকাতায়। ওই এজেন্টরা ধর্মতলা এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভেও বসেন।
পুলিশের মতে, সব থেকে বেশি সমস্যা হয় ধর্মীয় শোভাযাত্রার জন্য। ওই মিছিলের জেরে দুপুর থেকে পার্ক সার্কাস, পিকনিক গার্ডেন, বন্ডেল রোড, সিআইটি রোড, মৌলালি মোড়, লেনিন সরণি, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোড, পার্ক স্ট্রিট, নিউ পার্ক স্ট্রিট এলাকায় যানজট হয়। মহাত্মা গাঁধী রোড, কলেজ স্ট্রিট, সূর্য সেন স্ট্রিটেও যানজট হয়। তিনটে নাগাদ মিছিল মধ্য কলকাতায় ঢোকে। বিভিন্ন রাস্তায় যানবাহন থমকে যায়। বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ মিছিলটি বৌবাজার হয়ে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে ঢোকে। তখনই শেষ হয় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সভাটি। তড়িঘড়ি সভাস্থল খালি করে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ খুলে দেওয়া হয়। জওহরলাল নেহরু রোড দিয়ে উত্তর কলকাতামুখী গাড়িগুলিকে ওই রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ধর্মতলায় পৌঁছয় মিছিল। তার পর থেকে কার্যত ধর্মতলা এলাকায় গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুল দিয়ে অবশ্য রবীন্দ্র সদনমুখী গাড়ি চালু ছিল। মিছিলটি পার্ক সার্কাসের দিকে যাওয়ায় সন্ধ্যার দিকে ফের যানজটে পড়ে ওই এলাকাগুলি।
ভরবিকেলে ধর্মতলায় গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই দুর্ভোগে পড়েন। বছর দুয়েকের ছেলেকে নিয়ে শিয়ালদহ যাচ্ছিলেন সুকুমার দাস। গাড়ি না পেয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হন। কোথা থেকে গড়িয়াহাট যাওয়ার ট্যাক্সি মিলবে, জানতে এক আইপিএসকেই পাকড়াও করেন এক দম্পতি।
মিছিল যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে গোটা ট্রাফিক ব্যবস্থা আটকে না যায়, তার জন্য কিছু রাস্তায় গাড়ি ঘোরানো হয়েছে। তবে তা পূর্ব-নির্ধারিত ছিল না। পুলিশের দাবি, মিছিলের অবস্থা দেখে এলাকাভিত্তিক গাড়ি ঘোরানো হয়। তবে সন্ধ্যা গড়িয়ে যাওয়ার পরেও যে পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হয়নি, তা মেনে নেন লালবাজারের কর্তারাও। |
|
|
|
|
|