|
|
|
|
ব্যাঙ্কের বেতন চুক্তি |
ছ’দফা শর্ত মানতে নারাজ ইউনিয়ন
প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী • কলকাতা |
সংশোধিত বেতন-কাঠামো নিয়ে আলোচনা এখনও বিশ বাঁও জলে। তার উপর নতুন বেতন চুক্তি করার জন্য কর্মী-অফিসারদের আগে ছ’দফা শর্ত মানার কথা বলেছে সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। উল্টো দিকে, ইউনিয়নগুলির দাবি, ওই সমস্ত শর্ত কোনও ভাবেই মানতে নারাজ তারা। তাদের অভিযোগ, এ সবই কর্তৃপক্ষের তরফে সময় নষ্টের কৌশল। যে কারণে এ নিয়ে বিরোধের মীমাংসা আদৌ কবে হবে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চিত তারা। পরিস্থিতি ঘোরালো হওয়ায় কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার আগে সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলও।
বেতন সংশোধনের দাবিতে সম্প্রতি দেশ জুড়ে দু’দিনের ধমর্ঘটে সামিল হয়েছিল ব্যাঙ্ক কর্মী ও অফিসারদের ইউনিয়নগুলি। কিন্তু কাজ না-হওয়ায় আন্দোলন জোরদার করতে কোমর বাঁধছে ব্যাঙ্ক শিল্পের ইউনিয়নগুলির যৌথ সংগঠন ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন্স (ইউএফবিইউ)। উল্টো দিকে, দাবি-দাওয়া শুনতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সংগঠন ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস আসোসিয়েশন (আইবিএ)-এর। কিন্তু ধর্মঘটের পর কঠোর বার্তা দিতে পূর্ব নির্ধারিত ওই বৈঠক বাতিল করে দিয়েছে আইবিএ।
অনেকের আশঙ্কা, এর পর লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গেলে, নতুন সরকার আসার আগে সংশোধিত বেতন চূড়ান্ত হবে না। কারণ, নির্বাচন বিধি অনুযায়ী তখন তাতে সায় দিতে পারবে না কেন্দ্র।
ইউএফবিইউ-র আহ্বায়ক নগেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “ভোটের দিন ঘোষণা হলে বেতন সংশোধন পিছিয়ে যাবে। এ কথা মাথায় রেখে ইচ্ছাকৃত ভাবেই আলোচনা স্থগিত রেখেছে আইবিএ।” আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ ঠিক করতে ১৯ ফেব্রুয়ারি ফের বৈঠকে বসছেন তাঁরা।
কর্মী সংগঠনের অন্যতম প্রধান আপত্তি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের ছ’দফা শর্ত নিয়ে। যার মধ্যে রয়েছে
• বেতন বৃদ্ধির একটা বড় অংশ কাজের ভিত্তিতে (পারফর্ম্যান্স বেসড্) হওয়া।
• বেতন চুক্তির মধ্যে শুধু স্কেল-৩ বা সিনিয়র ম্যানেজার পর্যন্ত অফিসারদের রাখা। (বাকিদের জন্য চুক্তি হবে না। তাঁদের বেতন ঠিক করবেন কর্তৃপক্ষই)
• বয়স ৫৫ বছর হলে অথবা ৩০ বছর চাকরি করা হয়ে গেলেই তাঁকে স্বেচ্ছাবসর দেওয়ার স্বাধীনতা।
• অবসরের পরেও কোনও কর্মীর চাকরি সংক্রান্ত অভিযোগের (ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন) মীমাংসা না-হওয়া পর্যন্ত অবসরকালীন পাওনাগণ্ডা না-দেওয়া। (এখন এ নিয়ম অফিসারদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)
• অফিসার, কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ দেওয়ার বদলে নির্দিষ্ট অঙ্কের চিকিৎসা বিমা চালুর প্রস্তাব।
• কস্ট-টু-কোম্পানির (সিটিসি) ভিত্তিতে বেতনের অঙ্ক উল্লেখ।
নগেনবাবুর মতে, “এগুলি মানা অসম্ভব।” তবে ইউএফবিইউ-র অন্যতম শরিক এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগরের বক্তব্য, “মানা কঠিন। তবে কথা হতে পারে। আশা করি, আইবিএ সেই দরজা খুলবে। বেতন চুক্তি সই হতে দেরি হলে, অশান্তি বাড়বে।” |
|
|
|
|
|