মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত বাবা, যাবজ্জীবন অভিযুক্তদের
কিশোরী মেয়েকে উত্যক্ত করায় প্রতিবাদ করেছিলেন বাবা। সেই আক্রোশে বাবাকে গুলি করে খুন করার দায়ে দুই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল রায়গঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা প্রথম আদালত। বুধবার সন্ধ্যায় বিচারক উত্তমকুমার শাহ ওই নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে সাজাপ্রাপ্তদের পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে সাজার মেয়াদ আরও ছ’মাস বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্তদের নাম সুব্রত কুণ্ডু ও চিত্ত বিশ্বাস। তাদের বাড়ি রায়গঞ্জের পূর্ব রূপাহার এলাকায়। অন্য একটি খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এক বছর আগে চিত্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় রায়গঞ্জের ফাস্ট ট্র্যাক ফাস্ট আদালত। বর্তমানে সে সাজা খাটছে।
রায়গঞ্জ জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী শেখর পাল বলেন, “সুব্রত দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী এক কিশোরীকে উত্যক্ত করছিল। ওই কিশোরীর বাবা প্রতিবাদ করায় সুব্রত তার বন্ধু চিত্তকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে গুলি করে খুন করে বলে প্রায় সাড়ে চার বছর আদালতে মামলা চলার পর প্রমাণিত হয়েছে। পুলিশ, চিকিৎসক ও ওই কিশোরীর পরিবারের লোকজন মিলিয়ে মোট ১৩ জন আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন।” সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী আশিস সরকার অবশ্য বলেন, “খুনের ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী নেই। তাছাড়া নিহতের পরিবারের তরফে সাজাপ্রাপ্তদের নামে কোনও অভিযোগও করা হয়নি। পরবর্তীতে ওই কিশোরী ও নিহতের পরিবারের লোকজনের কথার উপর ভিত্তি করে পুলিশ সুব্রত ও চিত্তকে গ্রেফতার করে। সাজাপ্রাপ্তেরা নির্দোষ। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাচ্ছি।” মুখ্য সরকারি আইনজীবী শেখরবাবু জানান, প্রত্যক্ষদর্শী না থাকলেও আদালত অন্য সাক্ষী ও পরিস্থিতি বিচার করে রায় দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পূর্ব রূপাহার এলাকার বাসিন্দা মজিবুর রহমান রূপাহার হাটখোলা থেকে সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছেই দুই দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ করে কয়েকটি গুলি করে পালায়। তাঁর বুকে গুলি লাগে। রায়গঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মজিবুরবাবুর ভাই অজিত আলি অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন দুষ্কৃতীর কথা উল্লেখ করে রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই ঘটনার সময়ে মজিবুরের মেয়ে রায়গঞ্জের কৈলাসচন্দ্র রাধারাণী বিদ্যাপীঠে দশম শ্রেণিতে পড়াশুনা করত। সরকারি আইনজীবী শেখরবাবু জানান, খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সুব্রত দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাতায়াতের পথে মজিবুরের মেয়েকে উত্যক্ত করার পাশাপাশি প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিল। কিন্তু ওই কিশোরী তাতে সাড়া দেয়নি। মেয়েকে উত্যক্ত করার কথা জানতে পেরে মজিবুর সুব্রতকে একাধিকবার সতর্কও করেন। মজিবুরবাবু খুন হওয়ার কিছুদিন আগে তাঁর মেয়ে অসুস্থ হয়ে রায়গঞ্জের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়। সুব্রত নার্সিংহোমে গেলে মজিবুরবাবুর সঙ্গে তার গোলমাল হয়। এরপরেই মজিবুর খুন হন।
প্রাথমিক তদন্তের পর ২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর পুলিশ সুব্রতকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চিত্তকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় তিনমাস জেল হেফাজতে থাকার পর আদালতে নির্দেশে সুব্রত জামিনে ছাড়া পেলেও পুরনো একটি খুনের মামলায় আদালত চিত্তকে জেল হেফাজতে রেখে বিচারপর্বের নির্দেশ দেওয়ায় তার জামিন হয়নি। যদিও সাজা ঘোষণার আগে সুব্রত ও চিত্ত বিচারককে বলেছে, আমরা মজিবুর রহমানকে খুন করিনি। শুধু সন্দেহের বশে আমাদেরকে ফাঁসানো হয়েছে।
মাকে খুনে ধৃত। মাকে খুনের অভিযোগে ছেলেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিনহাটা থানার নিগমনগরে ওই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানায় নিহতের নাম দুলুরানি চক্রবর্তী (৫৯)। এ দিন দুপুরে পারিবারিক বিবাদের জেরে রান্নাঘরে কাজ করার সময় দুলুরানিদেবীর মাথায় বাঁশ দিয়ে তার ছেলে দিলীপ চক্রবর্তী আঘাত করে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়। পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “অভিযুক্ত নেশাগ্রস্ত বলে জানা গিয়েছে। তাকে ধরা হয়েছে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.