চার দশক ধরে শরীরের ভিতরে মৃত ভ্রূণ |
সংবাদ সংস্থা • ব্রাসিলিয়া
১৩ ফেব্রুয়ারি |
পেটে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ব্রাজিলের বাসিন্দা বছর চুরাশির এক বৃদ্ধা। প্রাথমিক পরীক্ষায় ধরা পড়েনি কিছুই। কিন্তু এক্স-রে রিপোর্ট দেখার পরেই সামনে এল ব্যথার কারণ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ৪৪ বছর ধরে একটি মৃত ভ্রূণ রয়েছে ওই মহিলার পেটে। ডাক্তারি পরিভাষায় এই ভ্রূণের নাম ‘লিথোপেডিয়ন’, যা বেশি পরিচিত ‘স্টোন বেবি’ নামে।
গত শুক্রবারের ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মহিলা জানিয়েছেন, ৪০ বছর বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন তিনি। পাঁচ মাস পেরোনোর পর এক দিন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। গ্রামে কোনও চিকিৎসক না থাকায়, বাধ্য হয়ে গিয়েছিলেন এক স্থানীয় ওঝার কাছে।
ওই মহিলার দাবি, ওঝার দেওয়া ‘ওষুধ’ খেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই আরাম পান তিনি। তার পর থেকে আর বড় হয়নি তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণ। এত দিন ধরে কোনও রকম শারীরিক অসুবিধাও হয়নি তাঁর।
ব্রাজিলের পালমাস এলাকার পোর্তো ন্যাশনাল হাসপাতালের স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সারাইভা কারাতকা জানিয়েছেন, মহিলা ভেবেছিলেন গর্ভপাত হয়ে গিয়েছে তাঁর। তার পর থেকে কোনও রকম অসুস্থতার মুখেও পড়েননি তিনি। ভ্রূণটির মৃত্যু হলেও, মহিলার স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় কাজগুলি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল সেই মৃত ভ্রূণ নিয়েই। আর সেই অভ্যাসেই পেরিয়ে গিয়েছে চার দশকেরও বেশি সময়।
চিকিৎসক সারাইভার কথায়, “এটা নিঃসন্দেহে অস্বাভাবিক ঘটনা। আরও অবাক ব্যাপার, এত বছর ধরে তেমন কোনও সমস্যাও হয়নি ওই মহিলার শরীরে।”
তবে প্রথম নয়, এর আগেও সামনে এসেছে ‘স্টোন বেবি’দের ঘটনা। গত ডিসেম্বরেই জানা
গিয়েছিল কলম্বিয়ায় বোগোতার বাসিন্দা ৮২ বছরের এক মহিলার কথা। ৪০ বছর ধরে মৃত ভ্রূণ বহন করছিলেন তিনি। ২০০৯ সালেও সামনে আসে ৯২ বছর বয়সি চিনা মহিলার ঘটনা, যিনি ৬০ বছর ধরে গর্ভে বহন করেছিলেন ‘স্টোন বেবি’।
আধুনিক চিকিৎসার ইতিহাসে সর্বপ্রথম এ ধরনের ঘটনার কথা জানা যায়, ১৫৮২ সালে। ৬৮ বছর বয়সী ফরাসি মহিলার মৃত্যুর পর অটোপ্সি করে দেখা যায়, আঠাশ বছর ধরে একটি পূর্ণবয়স্ক ‘স্টোন বেবি’ রয়েছে তাঁর গর্ভাশয়ে। আজ পর্যন্ত কমবেশি ৩০০টি ‘স্টোন বেবি’র ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। |