ছড়াচ্ছে ইন্টার্ন-বিক্ষোভ, কাজে
না-ফিরলে নাম কাটারও হুমকি
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির মোকাবিলায় কঠোর হচ্ছে রাজ্য সরকার। রোগীদের ভোগান্তি বাড়িয়ে যে-সব ইন্টার্ন আন্দোলনে নেমেছেন, তাঁদের রেজিস্ট্রেশন বা নথিভুক্তি আটকে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। অবিলম্বে কর্মবিরতি না-তুললে ইন্টার্নশিপ বা হাউসস্টাফশিপ থেকে সরাসরি বরখাস্ত করা অর্থাৎ নাম কেটে দেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকের একটি পোস্টের জেরে গ্রামে যাওয়ার আতঙ্ক থেকে বুধবার শুধু বাঁকুড়া মেডিক্যালে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন ইন্টার্নদের একাংশ। বৃহস্পতিবার তা ছড়িয়ে পড়ে মেদিনীপুর, উত্তরবঙ্গ এবং বর্ধমানেও। আজ, শুক্রবার কলকাতাতেও এর আঁচ পড়বে বলে জুনিয়র ডাক্তারেরা হুমকি দিয়েছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতেই এ দিন প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, যে-সব মেডিক্যাল কলেজে সমস্যা হচ্ছে, সেখানে আন্দোলনকারী ইন্টার্নদের নাম চাওয়া হয়েছে অধ্যক্ষদের কাছে। তিনি বলেন, “কাজ বন্ধ করে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এমনকী যাঁরা এ ভাবে কাজ বন্ধ রাখছেন, তাঁরা যাতে রেজিস্ট্রেশন নম্বর না-পান, সেই ব্যাপারেও আমরা মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে সুপারিশ করব।”
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অবশ্য আন্দোলনকারীদের হেলদোল দেখা যায়নি। ফেসবুকের একটি পোস্টের ভিত্তিতে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্নেরা বুধবার থেকে কাজ বন্ধ রেখেছেন। এ দিন কর্মবিরতি শুরু হয়ে যায় উত্তরবঙ্গ, মেদিনীপুর এবং বর্ধমানেও। চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ-র সম্পাদক শান্তনু সেন ইন্টার্নদের অনুরোধ জানান, এ ভাবে রোগীদের ভোগান্তি ঘটিয়ে তাঁরা যেন আর আন্দোলন না-করেন।
কিন্তু প্রশাসনের হুঁশিয়ারি বা আইএমএ-র আবেদনে কর্ণপাত করার ইঙ্গিত মেলেনি। মেদিনীপুরে শুধু ইন্টার্ন নয়, এমবিবিএস পড়ুয়ারাও এ দিন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হন। কর্মবিরতি না-তুললে ইন্টার্নশিপ এবং হাউসস্টাফশিপ থেকে বরখাস্ত করা হবে বলে এ দিন বিকেলে নোটিস দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তার পরে ইন্টার্নদের তরফে দাবি করা হয়, তাঁরা কর্মবিরতি করছেন না, শুধু বিক্ষোভে সামিল হচ্ছেন। যদিও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শঙ্কর কবিরাজ বলেন, “জুনিয়র চিকিৎসকেরা মিথ্যে কথা বলছেন। তাঁরা বুধবার থেকেই কাজ করছেন না।” বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের কর্মবিরতিতে শুধু ইন্টার্ন নন, যোগ দেন ডেন্টাল, নার্সিং এবং ফিজিওথেরাপির ছাত্রছাত্রীরাও।
জুনিয়র ডাক্তারদের একটি সংগঠন তাদের ফেসবুক পেজে বুধবার লিখে দেয় যে, মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা এমসিআই-এর নির্দেশে ইন্টার্নশিপের পরে এক বছর গ্রামে কাজ করা বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছে। ফেসবুকের সেই পোস্টের জেরেই বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে কাজ বন্ধ করে দেন ইন্টার্নদের একটা বড় অংশ। যদিও রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, ইন্টার্নশিপের পরে গ্রামে পাঠানোর ব্যাপারে তাঁদের কাছে কোনও নির্দেশিকাই আসেনি। তবে গ্রামে চিকিৎসক-সঙ্কট মেটাতে এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভাবনাচিন্তা করছে এমসিআই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এ বিষয়ে নীতিগত ভাবে সহমত হলেও এখনও কোনও আইন পাশ হয়নি।
বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ নেওয়ার আগেই এ ভাবে কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন শুরু করায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইন্টার্নেরা। তাঁদের বক্তব্য, এক বার আইন পাশ হয়ে গেলে আন্দোলন করে কিছু বদলানো যাবে না। তা ছাড়া এর আগে বিষয়টি নিয়ে বহু বার স্বাস্থ্যকর্তাদের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের কোনও কথাই শোনা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা এই পথ বেছে নিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.