|
|
|
|
তেলঙ্গানা বিতর্কে নীরবই রইল মোর্চা
নিজস্ব সংবাদদাতা • দার্জিলিং |
পৃথক তেলঙ্গানা গঠনের জন্য বৃহস্পতিবার লোকসভায় ইউপিএ সরকারের বিল পেশ নিয়ে গোলমালের জেরে দেশ জুড়ে হইচই শুরু হয়েছে। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এই বিষয়ে এ দিন কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেই রইল। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির বক্তব্য, “আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। হুড়োহুড়ির কিছু নেই। যথা সময়ে দলের তরফে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।” তবে সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “মনে রাখতে হবে আমরা কিন্তু গোর্খাল্যান্ডের দাবি হৃদয়ে রেখেই জিটিএ গড়েছি।”
কিন্তু গত বছর জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নীতিগত ভাবে তেলঙ্গানা গঠনের সিদ্ধান্ত জানানোর পরে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সরাসরি আন্দোলনেই নেমে পড়েছিল মোর্চা। সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ জিটিএ প্রধানের পদ থেকে ইস্তফাও দেন। তারপরে প্রায় টানা দু’মাস ধরে দার্জিলিং পাহাড়ে বন্ধ পালন করে মোর্চা। সেই বন্ধে তখন পাহাড়ের স্বাভাবিক জনজীবন একরকম স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।
তা হলে এ বার মোর্চা নীরব কেন? মোর্চার অন্দরের খবর, গত বারের আন্দোলনে পাহাড়ে যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, তা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার তড়িঘড়ি কোনও আন্দোলনে যেতে নারাজ তাঁরা। গত বছরের আন্দোলনের ফলে পাহাড়ে পর্যটন ব্যবসা প্রচণ্ড মার খায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় শিক্ষক ও অভিভাবকেরাও মোর্চার উপরে অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। সাধারণ মানুষও সেই টানা বন্ধ ভাল ভাবে মেনে নেননি। যে কারণে মোর্চার সমর্থনে ভাঁটা পড়ে। তার পরপর মোর্চা ছেড়ে পাহাড়ের বহু বাসিন্দা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সে কারণেই মোর্চার শীর্ষ নেতৃত্বের একটি অংশ এ বার আর এখনই তেমন কোনও আন্দোলনে যেতে রাজি নন। তার উপরে পাহাড়ে এখন পর্যটনের ভরা মরসুম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও খোলা। মোর্চা নেতাদের কাছে খবর, পাহাড়বাসীরা চান না এই সময়ে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হোক।
কিন্তু মোর্চার এই অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছে পাহাড়ের অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতির প্রশ্ন, “মোর্চা যদি জিটিএ চালিয়ে পাহাড়ের উন্নয়ন করবে তা হলে আগে হুটহাট আন্দোলনে নেমে জনতাকে নানা সমস্যায় ফেলেছিল কেন?” প্রতাপবাবুর অভিযোগ, মোর্চা নেতারা আলাদা রাজ্যের দাবির প্রতি যথেষ্ট দায়বদ্ধ নন। আর একটি মোর্চা বিরোধী দল সিপিআরএম-ও মোর্চার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষ করেছে। তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের অবশ্য প্রতিক্রিয়া, “মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিক চেষ্টায় পাহাড় হাসছে। জিটিএ জোরগতিতে উন্নয়নে নেমেছে। সেখানে এখন অশান্তির চেষ্টা শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন কোনও পাহাড়বাসীই বরদাস্ত করবেন না।” |
|
|
|
|
|