প্রেমিকা নাবালিকা। তাই এখনই বিয়েতে আপত্তি তুলেছিল প্রেমিক। অন্য দিকে মেয়ের বাড়ির লোক চাপ দিচ্ছিলেন, তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে হবে। এর মধ্যেই ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র ঠিক দু’দিন আগে বুধবার সন্ধ্যায় অগ্নিদগ্ধ হল ওই নাবালিকা। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখন সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আগুনে তার দেহের প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে।
কিশোরীর বাবা ওই যুবকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ওই যুবক-সহ তার মা ও মামাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ওন্দা থানার একই গ্রামে ওই কিশোরী ও যুবকের বাড়ি। কিশোরীটি একাদশ শ্রেণিতে পড়ে, যুবকটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে খবর, কয়েক বছর ধরে ওদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু যুবকটি জাতিতে নিচু হওয়ায় মেয়েটির পরিবার প্রথমদিকে এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা অন্যত্র মেয়ের বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন। একটি ছেলের সঙ্গে তার বিয়ের কথাবার্তাও কিছুটা এগোয়।
কিশোরীর বাবা বলেন, “মেয়ে ওই যুবককেই বিয়ে করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেনে আমরা ওদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু যুবকটি এখনই আমার মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি ছিল না। ওই জন্যই মেয়ে গায়ে আগুন দিয়েছে।”ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে তাঁর সম্পর্কিত এক দাদা দাবি করেছেন, “মেয়েটির বিয়ের বয়েস না হওয়ায় ভাই অপেক্ষা করতে বলেছিল। সেই সময়ের মধ্যে সে একটা চাকরি জোগাড় করার চেষ্টা করত। অন্য দিকে, মেয়েটির পরিবার অন্যত্র তার বিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন। তাতেই ভয় পেয়ে সে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে।
মেয়ে নাবালিকা হওয়া সত্ত্বেও কেন বিয়ের তোড়জোড় করছিলেন? মেয়ের বাবার দাবি, “মেয়ে প্রেম করছিল বলে চারিদিকে রটে গিয়েছিল। যুবকটিও পরে বিয়ে করার ব্যাপারে কোনও রকম ভরসা দিতে পারেনি। ভবিষ্যতে যদি সে আমার মেয়েকে ছেড়ে দিত, তা হলে ওর কোথাও বিয়ে দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ত বলেই তাড়াতাড়ি ওদের বিয়ে দিতে চাইছিলাম।” বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক পার্থ ঘোষ এ দিন বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। নাবালিকার বিয়ে দেওয়া যে অপরাধ, এই বার্তাটা নিয়ে সমাজের একটা স্তরে এখনও হয়তো আমরা পৌঁছতে পারিনি। ঘটনাটি সর্ম্পকে বিশদে খোঁজ নেব।” |