অভিভাবকেরাই মিড ডে মিল রান্নার দায়িত্ব নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত রান্না করা খাবার পাতে পড়ল পড়ুয়াদের। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফদারকাটি শিশু শিক্ষা নিকেতনে বৃহস্পতিবার থেকে ফের মিড ডে মিল চালু হল। তিনটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে কারা রান্নার দায়িত্ব পাবে তা নিয়ে গণ্ডগোল ও মারামারির ফলে বছর চারেক আগে ওই স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন পুলিশ এবং প্রশাসনের উপস্থিতিতে পড়ুয়াদের মায়েরা নিজেদের হাতে রান্নার দায়িত্ব তুলে নেন। ভাত, ডিমের ঝোল রান্না করে খেতে দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের। পরিবেশন করেন বিডিও। |
ছাত্রছাত্রীদের খাবার পরিবেশন করছেন বিডিও। ছবি: নির্মল বসু। |
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০০৩ সালে তরফদারকাটি শিশু শিক্ষা নিকেতন সরকারি অনুমোদন পায়। এর পর স্থানীয় তিনটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ওই স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেই রান্না করা ও খরচের হিসাব রাখা নিয়ে গোলমাল শুরু হয়। গণ্ডগোল এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে তিনটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। ভাঙচুর করা হয় রান্নাঘর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিবাদ মেটাতে পদক্ষেপ করা হলেও তা কাজে আসেনি। শেষ পর্যন্ত ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে যায়। এর পর কয়েকবার পড়ুয়াদের মুখ চেয়ে স্কুলের সহায়িকা এবং বিডিও মিড ডে মিল শুরুর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগোযাগ করে মিড ডে মিল চালু করার ব্যবস্থা করলেও বিবাদ মেটেনি। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয় কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠী নয়, এখন থেকে রান্নার দায়িতেহ নেবেন মাদার টিচার অ্যাসোসিয়েশন। সেই মতো এ দিন বিডিও মানস মণ্ডল, সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক কালিপদ সানা, স্কুলের সহায়িকা রোকেয়া খাতুন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ও পুলিশের উপস্থিতিতে পড়ুয়াদের মায়েরাই রান্না করেন।
রোকেয়া খাতুন বলেন, “স্কুলে তিনজন শিক্ষিকা ও ৮০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ফের মিড ডে মিল চালু হওয়ায় ছেলেমেয়েরাও খুশি।” |