একশো দিনের প্রকল্পে কাজ করে বেনিফিশিয়ারিরা মজুরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমার বেশ কিছু ব্লকে। এর ফলে মহকুমার গোসাবা, বাসন্তী, ক্যানিং-১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ থমকে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্যানিংয়ের নিকারিঘাটা, দাঁড়িয়া, হাটপুকুরিয়া, বাসন্তীর আমঝাড়া, চড়াবিদ্যা, ভরতগড়, ক্যানিং-২ ব্লকের মঠেরদিঘি, সারেঙ্গাবাদ, দেউলি-১ ও ২ প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বন্ধ রয়েছে ১০০ দিনের কাজ।
আমঝাড়ার নিতাই মণ্ডল, নিকারিঘাটার সনাতন মণ্ডল, মঠেরদিঘির কার্তিক মাইতি বলেন, “গ্রামে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করেছিলাম। মজুরির জন্য পঞ্চায়েত অফিসে গেলে আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে টাকা আসেনি।”
ক্যানিং-১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি পরেশ দাস। বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের মাজেদ মোল্লা, ক্যানিং-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সওকত মোল্লা বলেন, “টাকার সমস্যার জন্যই ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ করা যাচ্ছে না। কাজের নিরিখে যে পরিমাণ টাকা চেয়ে আবেদন করেছিসেই পরিমাণ টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এলাকায় প্রকল্পের কোনও কাজই করা যাচ্ছে না। যেমন যেমন টাকা পাচ্ছি সেইমতো কোনওরকমে কাজ চালানোর চেষ্টা করছি।”
ব্লক ও মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত জানুয়ারি মাস থেকে ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা ঠিকমতো আসছে না। ফলে ওই প্রকল্পে কাজ করা বেনিফিশিয়ারিদের মজুরির টাকা আটকে রয়েছে। নতুন কাজও দেওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, কয়েক মাস পরেই বর্ষা। তার আগে যদি গ্রামের রাস্তাগুলি সংস্কার না হয়, তাহলে বর্ষায় চলাফেরা করাই দায় হয়ে দাঁড়াবে। এ ছানড়া পুকুর কাটার মতো কাজও আটকে গিয়েছে। বাসন্তীর কাঁঠালবেড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রধান বুলা নাসরিন নস্কর বলেন, “টাকার অভাবে ১০০ দিনের প্রকল্পের কোনও কাজই করা যাচ্ছে না। আগে যে কাজ হয়েছে তার টাকাও দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে শ্রমিকদের কাছে কথা শুনতে হচ্ছে। অথচ আমরা নিরুপায়।”
মহকুমা শাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “টাকার সমস্যা রয়েছে ঠিকই। এ নিয়ে জেলাতেও রিপোর্ট পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” জেলা সভাধিপতি শামিমা শেখ বলেন, “কেন্দ্রের টাকা ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। তার ফলে ক্যানিং মহকুমার বেশ কিছু ব্লকে ১০০ দিনের প্রকল্প থমকে গিয়েছে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) অলকেশ প্রসাদ রায় বলেন, “টাকার সমস্যা ছিল, তবে তা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে। এই সপ্তাহের মধ্যেই বিডিওদের কাছে ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” |