নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
ভগবানগোলা ২ ব্লকের সরলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক বাস্তুকারকে (সরকারি পরিভাষায় এস টিপি, অর্থাত্ স্কিলড টেকনিক্যাল পার্সন) মারধর করার অভিযোগে দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করলেন সিপিএমের প্রধান। বুধবার দুপুরে ওই পঞ্চায়েত ভবনের ভিতরে এসটিপি কামরুজ্জামান শেখকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে বলে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য মাইনুল হক ওরফে ভেটু সহ মোট তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের
করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “অভিযুক্তরা পলাতক। তাঁদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।” জখম কামরুজ্জামান লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। তাঁর মাথার ক্ষতে সেলাই দিতে হয়েছে বলে চিকিত্সকরা জানান। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দবিতে ওই ব্লকের এবং ব্লক এলাকার ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সব সংগঠনের সরকারি কর্মীরা বৃহস্পতিবার কর্মবিরতির পাশাপাশি বিক্ষোভ সমাবেশও করেন।
লালবাগ মহকুমা হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে কামরুজ্জামান বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে মাইনুল হক বেনামে ঠিকাদারির কাজ করেন। ওই সব ঠিকাদারি কাজে অন্যায় ভাবে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন তিনি। সেই অন্যায় দাবি না মেনে নেওয়ায় আমার উপরে অতর্কিতে আক্রমণ করেন তিনি ও তাঁর দুই সঙ্গী। বেআইনি বন্দুকের বাট দিয়ে মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।”
বুধবার দুপুর সোয়া তিনটে নাগাদ ওই পঞ্চায়েত ভবনের একটি ঘরে কাজে ব্যস্ত ছিলেন প্রধান, নির্বাহী সহায়ক এবং এসটিপি। নির্বাহী সহায়ক লুত্ফর রহমান বলেন, “আচমকা ওরা তিন জন ঘরের মধ্যে ঢুকে কামরুজ্জামানকে মারধর করতে থাকে। বাধা দিলে আমাকেও মারধর করে মাইনুল হক ও তার সঙ্গীরা। ঠিকাদারি কাজে ওর অন্যায় দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় ওই ঘটনা ঘটেছে। কিংশুক ভৌমিক নামে আরও এক জন কর্মী মাইনুল হকের অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে ২০১১ সালে ওই পঞ্চায়েতে থেকে চলে গিয়েছেন।”
সরলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তথা সিপিএমের সরলপুর লোকাল কমিটির সদস্য আব্দুর সবুর বলেন, “আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাইনুল হক, নেশাদুল শেখ ও সেরাজুল ইসলাম অতর্কিতে আক্রমন করে। কামরুজ্জামানের মাথা ফেটে যায়। ওই দিনের ঘটনা খুবই নক্কারজনক ও নিন্দনীয়। পঞ্চায়েত প্রধান ও প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে আমি তাদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছি। ঘটনার কথা দলকেও জনিয়েছি।”
সিপিএমের সরলপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক আলিমুদ্দিন শেখ বলেন, “দলীয় স্তর থেকে ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষ প্রমাণিত হলে মাইনুল হককে শাস্তি পেতে হবে।” ‘পলাতক’ মাইনুল হকের মোবাইল ফোন বৃস্পতিবার সারাদিন বন্ধ ছিল। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |