|
|
|
|
বন দফতরের রেঞ্জ অফিসে পোস্ত গাছ |
অভিজিত্ চক্রবর্তী • ঘাটাল |
সরকারি দফতরের এলাকার মধ্যেই ফুটে আছে পোস্ত গাছের সাদা ফুল। পোস্ত চাষ পশ্চিমবঙ্গে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সন্ধান পেলেই সরকারের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। অথচ বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেল, পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াবসত এলাকায়, বন দফতরের রেঞ্জ অফিসের ভিতরে সার দিয়ে পোস্ত গাছ মাথা নাড়ছে।
কী করে পোস্ত গাছ এল সরকারি বাগানে? রেঞ্জ অফিসার অশ্বিনী ঘোষ বলেন, “কী করে এমন হল, বুঝতে পারছি না। এখানে বহু স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মী কাজ করেন। কেউ সম্ভবত পোস্ত ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। |
|
রেঞ্জ অফিসে সেই পোস্ত গাছের সারি। —নিজস্ব চিত্র। |
তা থেকেই গাছগুলি হয়েছিল। আমি আজই গাছ নষ্ট করে দিচ্ছি।” এতদিন নষ্ট করেননি কেন? রেঞ্জ অফিসার তার কোনও স্পষ্ট জবাব দেননি। বন দফতরের মেদিনীপুর বিভাগের ডিএফও বিজয় সালিমট বলেন, “আমি বিষয়টি জানার পরই অশ্বিনীবাবুর সঙ্গে কথা বলেছি। গাছগুলি নষ্ট করে দিতে বলেছি। কেন চাষ হল জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।” তবে প্রাথমিক ভাবে খোঁজ নিয়ে বিজয়বাবুর ধারণা, এটা অনিচ্ছাকৃত।
এ রাজ্যে পোস্ত চাষ সম্পূর্ণ বেআইনি। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর জোনাল ডিরেক্টর সুব্রত বিশ্বাস বলেন, “পোস্ত চাষের জন্য পশ্চিমবঙ্গের কোথাও কোনও অনুমতি দেওয়া হয় না। লাইসেন্স দেওয়ারও কোনও ব্যবস্থা নেই। সরকারি জমিতে কোনও সরকারি আধিকারিক পোস্ত চাষ করছেন খবর পেলে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পশ্চিম মেদিনীপুরের আবগারি দফতরের আধিকারিক এ আহমেদ বলেন, “খবর পেয়ে দফতরের অফিসারদের পাঠিয়েছি নয়াবসতে। তাঁরা এখনও রিপোর্ট দেননি। তবে প্রমাণ না পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন।”
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের আইন (এনডিপিএস আইন, ১৯৮৫) অনুযায়ী পোস্ত চাষ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। বেআইনি ভাবে পোস্ত, গাঁজা চাষ করার উপযুক্ত প্রমাণ মিললে ১০ বছরের জেল এবং ২ লক্ষ টাকা জরিমানা হবে। তবে প্রমাণের ক্ষেত্রে কড়া নিয়ম থাকায় প্রমাণ হওয়া কঠিন। আবগারি দফতর সূত্রের খবর, পোস্ত গাছের প্রথম ফুল হয়। পরে হয় ফল। অসাধু ব্যবসায়ীরা ফলকে ব্লেড দিয়ে চিরে রস সংগ্রহ করে। সেই রস থেকে তৈরি হয় আফিম।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বহু জায়গায় এখনও গোপনে এই চাষ হয়। কেশপুর, আনন্দপুর, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোডের নানা এলাকায় মাঝেমাঝেই অভিযান চালিয়ে পোস্ত গাছ নষ্ট করেন আবগারি দফতরের কর্তারা। তবে লুকোচুরি না করে, এমন খোলাখুলি সরকারি জমিতে পোস্ত গাছের দেখা পাওয়া নজিরবিহীন, বলছেন সরকারি কর্তাদের অনেকেই। |
|
|
|
|
|