|
|
|
|
টাকা নেই, লক্ষ্যমাত্রায় অনেকটাই পিছিয়ে পূর্ব |
আনন্দ মণ্ডল • তমলুক |
চলতি আর্থিক বছরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৩৭ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরির। কিন্তু আর্থিক বছর শেষের মাত্র দেড় মাস আগে সেই লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে জেলা। ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরের প্রায় সাড়ে দশ মাসে জেলায় শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে ৭৬ লক্ষ ৯৬ হাজার। অর্থাত্ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে মাত্র দেড় মাসের মধ্যে জেলায় আরও প্রায় ৬০ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি করতে হবে। যা সম্ভব নয় বলে মেনে নিচ্ছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরাও। তাঁদের মতে, এই প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে এখন মূল সমস্যা হল চাহিদা মতো টাকার অভাব। এর ফলে প্রকল্পের কাজের গতি কিছুটা হলেও কমেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “একশো দিনের কাজের প্রকল্পে চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত জেলায় ২২৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ৭৬ লক্ষ ৯৬ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে টাকার সমস্যা রয়েছে। যারা কাজ করেছেন, কিছু ক্ষেত্রে তাঁদেরও টাকা দিতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। আমরা প্রয়োজনীয় টাকা চেয়েছি।”
জেলায় এই প্রকল্পে শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার গড় দিনেও লক্ষমাত্রার থেকে বেশ কিছুটা পিছনেই রয়েছে জেলা। রাজ্য সরকারের তরফে এই প্রকল্পে জেলায় গড়ে ন্যূনতম ৫০ দিনের কাজ করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হলেও গত সাড়ে ১০ মাসে তাঁর অর্ধেক পূরণ হয়নি। জেলায় এই প্রকল্পে শ্রমিকরা গড়ে কাজ পেয়েছেন ২৪ দিন। আগামী ৩১ মার্চ চলতি আর্থিক বছর শেষ হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের অবশ্য বক্তব্য, গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক জব কার্ডধারী শ্রমিক এই প্রকল্পের কাজে যুক্ত হওয়ায় গড় শ্রমদিবসের পরিমাণ কম রয়েছে। জেলাশাসক জানান, প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে জেলার যে সব ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত পিছিয়ে রয়েছে তাঁদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করা হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার পাশাপাশি শ্রমিকদের আরও কাজ দিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। রাস্তা তৈরি, বনসৃজন, খাল সংস্কার প্রভৃতি কাজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উপকার প্রকল্পের (ইন্ডিভিজুয়াল বেনেফিট স্কিম) মাধ্যমে কাজ দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
জেলা প্রশাসনের দাবি, শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা এখনও দূরে থাকলেও একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সামগ্রিক ভাবে রাজ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। কয়েক মাস আগেও জেলার কিছু ব্লকে এই প্রকল্পের কাজে দুর্বলতা ছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক ( উন্নয়ন) অজয় পাল বলেন, “একশো দিনের কাজের প্রকল্পে জেলায় এখনও প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাজের টাকা বকেয়া রয়েছে। চাহিদা মতো টাকা না আসায় সময় মতো শ্রমিকদের কাজের টাকা দিতে পারা যাচ্ছে না। এর ফলে প্রকল্পের কাজের গতি কিছুটা কমেছে। প্রকল্পের কাজের জন্য ৬০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।” নন্দকুমার ব্লকের বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান নমিতা বাসুলী বলেন, “আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বিভিন্ন কাজে প্রায় ২২ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা শ্রমিকদের পাওনা রয়েছে। এ ছাড়াও কাজের সামগ্রী কেনা বাবদ আরও প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। কিন্তু গত প্রায় এক মাস টাকা না পাওয়ায় শ্রমিকদের টাকা দিতে পারছি না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” কখনও শোনা যায় টাকা খরচ হচ্ছে না। কখনও টাকা আসছে না। একশো দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে টানাটানিটা চলে সব সময়। |
|
|
|
|
|