সান্ত্বনা পুরস্কারও জুটল না ইস্টবেঙ্গলের
ইস্টবেঙ্গল-১ (৪) (চিডি-পেনাল্টি)
ইউনাইটেড স্পোর্টস-১ (৫) (বলদীপ)
চার বছর আগে গুয়াংঝৌ এশিয়ান গেমস থেকে টেনিসের (সিঙ্গলস) সোনা জেতার পর সোমদেব দেববর্মন বলেছিলেন, “প্রতিকূল অবস্থায় থাকলেও মাঠে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাই। এটাই পিছিয়ে যাওয়া ম্যাচ জেতার টোটকা।”
কলকাতা চ্যালেঞ্জার খেলতে এই মুহূর্তে ভারতের এই ডেভিসকাপার রয়েছেন শহরেই। রোজ তাঁর খেলা দেখতে ভিড় হচ্ছে সল্টলেক স্টেডিয়াম লাগোয়া বেঙ্গল টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)-এর কোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই সোমদেবের জন্মদিনে তাঁর এই ক্রীড়া-দর্শন ঝালিয়ে কি মাঠে নেমেছিলেন সংগ্রাম মুখোপাধ্যায়রা? আইএফএ শিল্ডের তৃতীয় স্থান নির্ণায়ক ম্যাচে পিছিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত লড়ে ইউনাইটেড কিপারের হাতেই যে আটকে গেল আর্মান্দোর ইস্টবেঙ্গল!
টাইব্রেকারে চিডি ও খাবরার পেনাল্টি আটকে দিয়ে সতীর্থদের উচ্ছ্বাসের মাঝে মাঠ ছাড়লেন ইউনাইটেড কিপার সংগ্রাম। ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথে কাঁচরাপাড়ার ছেলে বলেও গেলেন, “আজ দিনটা আমাদের। আর এই জয়টা দরকার ছিল। প্রাইজমানি থেকে ক্লাবের আর্থিক সমস্যার কিছুটা সুরাহা তো হবে।”
আইএফএ সূত্রে খবর, ইউনাইটেডের আর্থিক সমস্যার কথা বিবেচনা করে আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই র্যান্টিদের ক্লাবে পৌঁছে দেওয়া হবে পুরস্কার মূল্যের চেক। আইএফএ শিল্ডে চিডিরা যখন তৃতীয় হতেও ব্যর্থ, তখন স্পনসর-হীন বেলো, র্যান্টিরা পাঁচ লক্ষ টাকার চেক পকেটে পুরে ফেললেন স্রেফ ইচ্ছাশক্তি এবং হার না মানা মনোভাবের জন্য।

সংগ্রামের যে সেভে শিল্ডে তিন নম্বর ইউনাইটেড। বৃহস্পতিবার। ছবি: উৎপল সরকার।
বেতন নেই, আর্থিক টানাটানিই সম্বল। এই মরসুমে এর আগে হারানো যায়নি ইস্টবেঙ্গলকে। সেখানে শুরুতেই চিডির পেনাল্টি গোলে পিছিয়ে গিয়ে কোন মন্ত্রে হাসতে হাসতে মাঠ ছাড়লেন? সহকারী কোচ অঞ্জন নাথ বলছেন, “বিরতিতে ছেলেদের বলেছিলাম, আগামী বছর দল থাকবে কি না তা জানা নেই। এই ম্যাচে নিজেদের অন্তত চেনাও।” এতেই বাজিমাত!
একশো কুড়ি মিনিটের ম্যাচে ঘটনার ঘনঘটার অভাব ছিল না। খালি ফুটবলটাই ঘুম পাড়ানি!
প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে লাল-হলুদের এগিয়ে যাওয়া। তার পর শ্বাসকষ্টের জন্য মাঠ ছেড়ে ইস্টবেঙ্গল স্টপার রাজুর হাসাপাতালে যাওয়া। পঞ্চাশ মিনিট পিছিয়ে থেকে বলদীপের গোল শোধ। শেষ লগ্নে মারপিট করে গুরবিন্দর, এরিকের জোড়া লাল কার্ড— সবই রইল। কিন্তু দর্শনীয় ফুটবলটাই দেখা গেল না। দু’দলেরই একাধিক মিস পাস। গোলের সামনে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলা, ওপেন সিটার মিস। কোনওটাই বাকি রইল না। গোল ফস্কানোর প্রতিযোগিতায় চিডি, র্যান্টি, লেন, তুলুঙ্গারা পাল্লা দিয়ে লড়লেন।
দ্বিতীয়ার্ধে চিডিদের খেলা এলোমেলো হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ, রাজুর উঠে যাওয়া। ম্যাচ টাইব্রেকারে ফিরতেই ফের স্বমহিমায় সংগ্রাম। যাঁর বিশ্বস্ত হাত ইউনাইটেড শিবিরে আনল ‘ভিটামিন এম’। ম্যাচ শেষে ইউনাইটেড কর্তা নবাব ভট্টাচার্য তা-ও বলছিলেন, “জানি না কী ভাবে চালাব। র্যান্টি যদি অন্য দলে চলে যায় তা হলে আর আটকাব না।” লাল-হলুদ কোচ আর্মান্দো কোলাসো সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি। সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরী বলে গেলেন, “ইস্টবেঙ্গল তৃতীয় হওয়ার জন্য কোনও টুর্নামেন্ট খেলে না। তাই ম্যাচটা আগেই মানসিক ভাবে আমাদের হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল।”
নিট ফল, ফেড কাপে ব্যর্থতার পর শিল্ডে সান্ত্বনা পুরস্কারও জুটল না আর্মান্দোর। আই লিগের বাকি তেরো ম্যাচ থেকে এই হতাশা সুদে-আসলে মিটবে কি? ইতিবাচক উত্তর পেতে গেলে চিডিদের কিন্তু কথা কম বলে জয়ে ফিরতেই হবে।

ইস্টবেঙ্গল:
অভ্র, নওবা, গুরবিন্দর, রাজু (অভিষেক), সৌমিক, তুলুঙ্গা, মেহতাব (সুবোধ), লোবো, আলভিটো (খাবরা), লেন, চিডি।
ইউনাইটেড স্পোর্টস: সংগ্রাম, তপন, অনুপম, বেলো, ধনচন্দ্র, রফিক (বিশ্বজিৎ), জয়ন্ত, শৌভিক, এরিক, বলদীপ, র্যান্টি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.