|
|
|
|
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ |
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে পঞ্চায়েত-প্রতিনিধি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হলেন তৃণমূলের ৭ জন প্রার্থী। এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২০ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই ৭টি আসনের সবকটিতে জয় নিশ্চিত করেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) তথা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার কবিতা মাইতি বলেন, “৭টি আসনে ৭ জনই মনোনয়ন দাখিল করেছেন। ফলে, আর ভোটাভুটি হবে না।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ কমিটির সদস্য সংখ্যা মোট ৪০ জন। শিক্ষক-প্রতিনিধি, সরকার মনোনীত প্রতিনিধি ছাড়াও থাকেন পুরসভা এবং পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা। ৭ জন পঞ্চায়েত প্রতিনিধির মধ্যে জেলা পরিষদের ৩ জন এবং ৪ জন পঞ্চায়েত সমিতির। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় বিপুল সাফল্য পায় তৃণমূল। পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ২৮টি তারা দখল করে। শুধু সবং পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে কংগ্রেস। আর সিপিএম একটিতেও জেতেনি। অন্য দিকে, জেলা পরিষদের ৬৭টি আসনের মধ্যে ৬৪টি দখল করে তৃণমূল। ২টিতে সিপিএম, একটিতে কংগ্রেস জেতে। এই পরিস্থিতিতে নিশ্চিত হার জেনে বিরোধী-শিবিরের কেউ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের পঞ্চায়েত-প্রতিনিধি নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেননি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত-প্রতিনিধি নির্বাচনে মনোনয়নের শেষ দিন ছিল ৭ ফেব্রুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল ১১ ফেব্রুয়ারি। সেই মতো মঙ্গলবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়। দেখা যায়, ৭টি আসনের জন্য ৭ জনই মনোনয়ন দাখিল করেছেন। জেলা পরিষদস্তরে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মেদিনীপুর সদরের কাজী আবদুল হামিদ, বেলপাহাড়ির বিকাশ সিংহ এবং দাসপুরের তপনকুমার দত্ত। অন্যদিকে, পঞ্চায়েত সমিতিস্তরে মনোনয়ন দাখিল করেছেন খড়্গপুর মহকুমার প্রদীপকুমার পাত্র, ঘাটাল মহকুমার দিলীপ মাঝি, ঝাড়গ্রাম মহকুমার সত্যরঞ্জন বারিক এবং মেদিনীপুর সদর মহকুমার সুধাংশু শেখর মণ্ডল। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪৬৮২টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। ছাত্রছাত্রী সাড়ে ৩ লক্ষের কিছু বেশি। নতুন আরও ১০৯টি স্কুল চালুর তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। সাধারণত, এক কিলোমিটার ছাড়া একটি করে প্রাথমিক স্কুল থাকার কথা। কিন্তু, তা নেই। জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলো ঠিক কী পরিস্থিতিতে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে এক সময় সমীক্ষাও করে সংসদ। সমীক্ষাতেও এই ছবি উঠে আসে। আগে স্কুলে ৪০ জন ছাত্রপিছু ১ জন করে শিক্ষক থাকার কথা ছিল। এখন সেখানে ৩০ জন ছাত্রপিছু এক জন করে শিক্ষক থাকার কথা। দেখা যায়, শহরের স্কুলগুলোয় শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। অথচ, প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলগুলোয় শিক্ষকের সংখ্যা কম। লালগড়ের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর। জেলার একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে জঙ্গলমহল। জঙ্গলমহলের এই জেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠামো নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। সব স্কুলে আবার শৌচাগার, পানীয় জলের সুষ্ঠু ব্যবস্থাও নেই। সংসদ কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, পরিস্থিতি দেখে কিছু পদক্ষেপও করা হয়েছে। যেমন, বেশি সংখ্যক শিক্ষক রয়েছে, এমন স্কুলের এক বা একাধিক শিক্ষককে আশপাশের স্কুলে গিয়ে পড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে আবার জেলায় নতুন প্রাথমিক শিক্ষকও নিয়োগ হয়েছে। নতুন দেড় হাজার শিক্ষক নিয়োগের ফলে সার্বিক পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সদস্য মধুসূদন গাঁতাইত বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিতে জেলায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সেগুলো আগামী দিনে রূপায়িত করা হবে।” তাঁর কথায়, “পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা আসায় সংসদের কাজের সুবিধে হবে।” |
|
|
|
|
|