চালু হয়নি টিকিটঘর, ভোগান্তি রেলযাত্রীদের
ব্যান্ডেল যাবেন বলে স্ত্রীকে নিয়ে গিরিময়দান স্টেশনে পৌঁছে টিকিটের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন খড়্গপুরের মালঞ্চর বাসিন্দা প্রদীপ মাহাতো। টিকিট কেটে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনোর আগেই হাওড়াগামী ট্রেন স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে গেল। ফের পরের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। গিরিময়দান স্টেশনের নব-নির্মিত ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে টিকিট কাউন্টার চালু না হওয়ায় এ ভাবেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
গিরিময়দান স্টেশনে বন্ধ পড়ে টিকিট কাউন্টার।—নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-মেদিনীপুর শাখার গোকুলপুর থেকে গিরিময়দান পর্যন্ত সম্প্রতি ডাবল লাইন চালু হয়েছে। সেই কারণে খড়্গপুর ও গোকুলপুরের মধ্যবর্তী গিরিময়দান স্টেশনে তৈরি হয়েছে নতুন ২ নম্বর প্লাটফর্ম। আগে একটিই লাইন থাকায় ওই স্টেশনে শুধুমাত্র ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মেই ট্রেন থামত। এখন ডাবল লাইন চালু হওয়ায় হাওড়াগামী ট্রেন দাঁড়ানোর জন্য নতুন ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম গড়া হয়েছে। ওই প্ল্যাটফর্মে টিকিট কাউন্টারও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এখনও ওই কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি চালু হয়নি। হাওড়াগামী ট্রেন ধরতে যাত্রীদের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে ছুটতে হচ্ছে। এছাড়া টিকিট কাউন্টার থেকে দুই প্ল্যাটফর্মের সংযোগকারী ফুটব্রিজও দূরে হওয়ায় রেললাইন টপকে যাতায়াতের প্রবণতা বাড়ছে।
ইংরেজ শাসনকালে খড়্গপুর রেল কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে রেলশহরের চায়নাটাউন সংলগ্ন একটি ময়দানে সভা করেছিলেন শ্রমিকনেতা তথা প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি। সেই থেকেই ওই ময়দানের নাম হয় গিরিময়দান। খড়্গপুরের নিত্য যাত্রীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রয়াত প্রাক্তণ রেলমন্ত্রী গনি খান চৌধুরী খড়্গপুর-মেদিনীপুর রেলপথের মাঝে গিরিময়দানের অদূরে ভিক্টোরিয়া ময়দানের ধারে একটি স্টেশন গড়ার পরিকল্পনা নেন। স্টেশনের নাম দেওয়া হয় গিরিময়দান। রেলশহরের নিমপুরা, মালঞ্চ, মথুরাকাটি, সুভাষপল্লি, ভবানীপুর, রেল কলোনির ১ নম্বর, ২ নম্বর এলাকা ও নিউ সেটেলমেন্টের যাত্রীরা এই স্টেশনের উপর নির্ভরশীল। গিরিময়দান স্টেশন দিয়ে মেমু নিয়ে দিনে ৪৪টি লোকাল ট্রেন যাতায়াত করে। পুরুলিয়া এক্সপ্রেসও দাঁড়ায়।
খড়্গপুর থেকে গোকুলপুরের মধ্যবর্তী প্রায় ৭ কিলোমিটার অংশে এতদিন একটি লাইন ছিল। ফলে ট্রেনগুলিকে সিগন্যালের জন্য দীর্ঘক্ষণ গোকুলপুরে অপেক্ষা করতে হত। তবে গত ২০ ডিসেম্বর গিরিময়দান থেকে গোকুলপুর ডবল লাইন চালু হয়েছে। তবে খড়্গপুর পর্যন্ত বাকি ৩ কিমি অংশে ডবল লাইনের কাজ শেষ হয়নি।
তাই গিরিময়দানে দ্বিতীয় প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের অসংরক্ষিত আসনের টিকিটের জন্য দু’টি কাউন্টার রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে একটি কাউন্টার বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। কর্মী থাকলেও দ্বিতীয় কাউন্টারটি খোলা হয় না বলে অভিযোগ। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ রাজীব মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমার হাঁটুতে সমস্যা। তাই সিঁড়ি ভেঙে অত দূরে টিকিট কাটতে খুব অসুবিধা হয়।”
রেলের অবসরপ্রাপ্ত টিকিট পরীক্ষক মিন্টু চৌধুরী বলেন, “চাকরি জীবনে দেখেছি কিছু মানুষ স্বেচ্ছায় আর কিছু মানুষ বাধ্য হয়ে টিকিট কাটেন না। এ ক্ষেত্রে যাত্রীদের মধ্যে বাধ্য হয়ে টিকিট না কাটার প্রবণতা বাড়ছে। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য পূরণের উপযুক্ত ব্যবস্থা করে প্ল্যাটফর্ম চালু করা রেল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।” খড়্গপুরের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই টিকিটঘর চালু করতে যন্ত্রাংশ এবং কর্মী প্রয়োজন। চালু টিকিট কাউন্টারের জন্যও পর্যাপ্ত কর্মী নেই। টিকিটঘর চালু করতে ছ’মাস মতো লাগবে। তবে অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন বসানো যেতে পারে।” ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের বদলে হাওড়াগামী ট্রেনগুলিকে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করানো যায় কি না সেই বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন তিনি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.