দিল্লি বিধানসভায় তাণ্ডব, পেশ হয়নি জন লোকপাল

১৩ ফেব্রুয়ারি
তেলঙ্গানা প্রশ্নে আজ লোকসভায় যা হয়েছে তা কার্যত নজিরবিহীন হলেও, নৈরাজ্যের প্রতিযোগিতায় সমানে পাল্লা দিল দিল্লি বিধানসভা। প্রত্যাশা থাকলেও এ দিন জন লোকপাল বিল পেশও করল না অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার।
লোকসভার মতো কেউ মরিচ স্প্রে ব্যবহার করেননি কেউ। তবে মাইক ভাঙচুর, ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ, ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়ায় সংসদের চেয়ে বিশেষ পিছিয়ে ছিল না বিধানসভাও। আম আদমি পার্টির (আপ) আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতীর দিকে চুড়ি, লিপস্টিক ছোড়াও হয়েছে।
দিল্লি বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে আজ থেকে। অধিবেশনের শুরুতেই আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতীর ইস্তফাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা। নতুন সরকারে দেড় মাসের কার্যকালে একাধিক কারণে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন সোমনাথ। তাঁর বিরুদ্ধে মালব্যনগরে মহিলাদের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহ, পুলিশকে হুমকি দেওয়া, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে। আজ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিরোধী বিজেপি ও আপের সমর্থক কংগ্রেস, দু’দলই সোমনাথের ইস্তফার দাবিতে সরব হয়ে ওঠে।
কংগ্রেস বিধায়ক মহম্মদ আসিফ সোমনাথের ইস্তফা চেয়ে স্পিকার এম এস ধীরের টেবিলের সামনে এগিয়ে যান। কেউ বাধা দেওয়ার আগেই তিনি স্পিকারের টেবিলে থাকা একটি ফাইল ছিঁড়ে ফেলেন। ভেঙে দেন মাইকও। আপ বিধায়কেরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের আসনের দিকে ধেয়ে যান আসিফ। কেজরিওয়ালের সামনে পড়ে থাকা কাগজ ছিঁড়ে দেন তিনি। ভেঙে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রীর মাইকও। তাঁর দেখাদেখি অন্য কংগ্রেস ও বিজেপি বিধায়কেরাও নেমে আসেন ওয়েলে। প্রতি-আক্রমণে মুখ্যমন্ত্রীকে বাঁচাতে ওয়েলে নামেন আপ বিধায়কেরাও।
মুহূর্তে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় দিল্লি বিধানসভা। উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ আনেন। এরই মধ্যে বিজেপি বিধায়ক আর পি সিংহ বেশ কিছু কাগজ ছিঁড়ে তা সোমনাথের দিকে ছুড়ে মারেন। কোনও ভাবে মাথা সরিয়ে নিয়ে সেই আক্রমণ ঠেকান আইনমন্ত্রী। সোমনাথের দিকে চুড়ি ও লিপস্টিক ছোড়ারও চেষ্টা করেন কয়েক জন বিধায়ক। বিধানসভার নিরাপত্তরক্ষীরা কোনও ভাবে তাঁদের আটকান। শেষ পর্যন্ত স্থগিত করে দিতে হয় দিনের অধিবেশন।
পরে সাংবাদিক সম্মেলনে কেজরিওয়াল দাবি করেন, মুকেশ অম্বানীর বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়াতেই কংগ্রেস ও বিজেপি একজোট হয়ে আপের বিরুদ্ধে নেমেছে। আজ বিধানসভার কার্যবিবরণীতে জন লোকপাল বিলের উল্লেখ ছিল। কিন্তু এক দিন আগে বিধায়কদের কাছে বিলের প্রতিলিপি না পৌঁছনোয় শেষ মুহূর্তে ওই বিলটি আজ পেশ করার সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় কেজরিওয়াল সরকার। সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, রাতের মধ্যে সব বিধায়কের কাছে বিলের প্রতিলিপি পাঠানো হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে আগামিকাল বিল পেশ করা হতে পারে। বিল পেশে বাধা দেওয়া হলে ইস্তফার হুমকি দিয়ে রেখেছেন কেজরিওয়াল।
তবে কেজরিওয়াল সরকার আদৌ ওই বিল পেশ করতে পারে কি না তা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। কারণ নিয়ম বলছে, উপরাজ্যপাল তথা কেন্দ্রের ছাড়পত্র না নিয়ে কোনও বিলই বিধানসভায় পেশ করতে পারে না দিল্লি সরকার। এ ক্ষেত্রে এখনও সেই অনুমতি পাননি কেজরিওয়ালরা।
তাই দিল্লি সরকার আগামিকাল জন লোকপাল বিল পেশ করলেও সেটির বৈধতা নিয়ে সাংবিধানিক জটিলতা থেকেই যাবে। দিল্লিতে এখনই সরকার ফেলতে চায় না কংগ্রেস বা বিজেপি-র মধ্যে কোনও পক্ষই। তা-ই জন লোকপালে সমর্থন দিতে রাজি তারা। কিন্তু বিরোধী দলনেতা বিজেপি-র হর্ষবর্ধনের প্রশ্ন, “নিয়ম মেনে বিল পেশ হলে আমরা সমর্থনে রাজি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিলটি কি বৈধ?” গত কালই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কপিল সিব্বল জানিয়ে দিয়েছেন, এ ভাবে নিয়ম এড়িয়ে বিল আনতে পারে না দিল্লি সরকার। যদিও কেন্দ্রের সে সব যুক্তি মানতে রাজি নন আপ নেতৃত্ব। আগামিকালের দিকে তাকিয়ে আছে সব শিবিরই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.