|
|
|
|
টুজি স্পেকট্রাম |
কেন্দ্রের ঘরে ৬১ হাজার কোটি
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
১৩ ফেব্রুয়ারি |
দশ দিনের দমবন্ধ লড়াই শেষ। টুজি স্পেকট্রামের নিলাম থেকে ৬১ হাজার ১৬২ কোটি টাকা রাজকোষে ভরার বন্দোবস্ত করে ফেলল কেন্দ্র। যার মধ্যে অন্তত ১৮,২৯৬ কোটি হাতে পাওয়া যাবে এই আর্থিক বছরেই।
সরকারের প্রত্যাশার তুলনায় এই অঙ্ক বেশ বেশি। রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখতে হিমসিম খাওয়া অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কাছে এই বাড়তি টাকা পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনার মতো। যে কারণে নিলাম শেষে টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বলের মন্তব্য, “সরকার খুশি। অর্থমন্ত্রীর মুখে নিশ্চয়ই হাসি দেখব আমরা।”
স্পেকট্রামের চড়া দরে অবশ্য চিন্তায় ভোডাফোন, এয়ারটেলের মতো টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলি। অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশ্ন, তবে কি এতে বেড়ে যাবে মোবাইলে কথা বলা কিংবা নেট ঘাঁটার খরচ?
সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন সিব্বল। আগামী বছরগুলিতেও ওই খরচ সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যেই থাকবে বলেই তাঁর আশা। সংশ্লিষ্ট শিল্প মহলেরও অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নিলামে নতুন স্পেকট্রাম জিততে কিংবা পুরনো স্পেকট্রাম ধরে রাখতে সংস্থাগুলিকে বিপুল টাকা উপুড় করতে হবে ঠিকই। কিন্তু একসঙ্গে নয়। এখন ২৫ থেকে ৩৩% টাকা জমা দেবে তারা। বাকি টাকা জমা দেবে কিস্তিতে, দশ বছর ধরে। ২০১৬ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। ফলে পর্যাপ্ত সময় মিলবে এত জন্য।
কিন্তু পিটিআইয়ের খবর, টেলিকম শিল্পকে যে বিষয়টি কিছুটা চমকে দিয়েছে, তা হল এ বারের নিলামে মুকেশ অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স জিও ইনফোকমের ভূমিকা। আগে থেকে দেশের সবক’টি সার্কেলে ফোরজি স্পেকট্রাম পকেটে থাকা সত্ত্বেও এ বার নিলামে দু’ধরনের (৯০০ ও ১৮০০ মেগাহার্ৎজ) স্পেকট্রাম কিনতেই আগ্রাসী ভাবে ঝাঁপিয়েছিল তারা। ফলে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চড়া দর ডেকে যেতে হয়েছে অন্য মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলিকেও। বিশেষত তিন মেট্রো শহরের (কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বই) ৯০০ মেগাহার্ৎজের স্পেকট্রামের ক্ষেত্রে। অথচ শেষ পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, উন্নততর ৯০০ মেগাহার্ৎজ তো তারা কেনেইনি, এমনকী ১৮০০ মেগাহার্ৎজের স্পেকট্রামও কিনেছে ১৪টি সার্কেলে। ফলে অনেকেরই প্রশ্ন, তা হলে কি ভবিষ্যতের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের দুর্বল করে রাখতেই দর অনেকখানি চড়িয়ে দিয়ে গেল তারা?
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেশে ১২২টি লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পর তার মধ্যে বেশ কিছু ১৮০০ মেগাহার্ৎজের স্পেকট্রাম এ বার নিলামে চড়িয়েছিল কেন্দ্র। ছিল কিছু নতুন স্পেকট্রামও। এ ছাড়া, শীঘ্রই তিন মেট্রো শহরে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ায় কথা থাকায় সেখানকার ৯০০ মেগাহার্ৎজের স্পেকট্রামও নিলামে চড়িয়েছিল তারা। যাতে যোগ দিয়েছিল মোট আট সংস্থা। আগের দু’বার নিলাম সফল না-হওয়ায় সেই ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তির ভয় ছিল অনেকের। এমনকী ন্যূনতম দর কমিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রও।
কিন্তু নিলাম শেষে দেখা যাচ্ছে, মেট্রো শহরে টুজি স্পেকট্রামে নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছে ভোডাফোন এবং এয়ারটেল। প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা করে গুনে সব মিলিয়ে সব থেকে বেশি স্পেকট্রামও কিনেছে তারাই। কিছু স্পেকট্রাম দখলে নিয়েছে ইউনিনর, আইডিয়া, এয়ারসেল-ও। একেবারে শূন্য হাতে ফিরেছে টাটা কমিউনিকেশন্স।
হাত অবশ্য সব থেকে ভরা চিদম্বরমেরই। |
|
|
|
|
|