রোজের মতোই দিনের শেষে টাকার হিসেব করছিলেন বড়বাজারের একটি সংস্থার মালিক ও দুই কর্মী। অফিসে ছিলেন দুই ক্রেতা। দরজা ছিল ভেজানো। আচমকাই ঘরে ঢোকে চার যুবক। হাতে রিভলভার ও ভোজালি। পাঁচ জনের হাত পিছমোড়া করে বেঁধে দেয় তারা। মুখ আটকে দেয় লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে। মুহূর্তেই আলমারি খুলে বার করে নেয় কয়েক লক্ষ টাকা। বুধবার বড়বাজার থানার ১১ নম্বর ক্লাইভ রো -র পাঁচতলার এক অফিসের ঘটনা। অবশ্য ওই রাতেই দুষ্কৃতী দলের চার জন গ্রেফতার হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা ঘর থেকে বেরোনোর পরেই হাতের বাঁধন আলগা হওয়ায় তা খুলে চেঁচিয়ে লোক জড়ো করেন সংস্থার মালিক হাওড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় অগ্রবাল ও তাঁর কর্মীরা। চিত্কার শুনে একতলার মূল গেটে তালা দিয়ে দেন ওই বহুতলের অন্য সব সংস্থার কর্মীরা। বেগতিক দেখে তিনতলার একটি শৌচাগারের জানালা গলে পাইপ বেয়ে নেমে পালায় তিন দুষ্কৃতী। তখনই ধরা পড়ে এক জন। পুলিশ জানায়, গৌতম বারুই নামে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। জেরায় সে জানায়, তার বাড়ি বারাসতে। এও জানায়, রাতে সেখানে তল্লাশি হলে ধরা পড়তে পারে তিন সঙ্গীও। রাতে সেখানে হানা দেয় পুলিশ। গ্রেফতার হয় অমিত দত্ত, সান্টু দাস এবং অভিজিত্ বৈদ্য নামে তিন দুষ্কৃতী। তাদের কাছে একটি রিভলভার ও দু’টি ভোজালি মিলেছে। মিলেছে লুঠের ৪২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ওই চার জনকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়। সঞ্জয়বাবু অবশ্য পুলিশকে জানান, তাঁর অফিস থেকে ৫০ লক্ষ টাকা লুঠ হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ ওই দলে আরও দু’জন ছিল। তাদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ জানায়, ক্লাইভ রো -র ওই বাড়ির পাঁচ তলায় কিছু বেসরকারি সংস্থার অফিসের পাশে সঞ্জয় অগ্রবালের অফিস। তিনি পুলিশকে জানান, তিনি লোহার কারবারি। ওই বাড়িতে বিভিন্ন সংস্থার অফিসে কর্তব্যরত একাধিক কর্মী জানান, বুধবার সন্ধ্যায় পাঁচতলা থেকে চিত্কার শুনে অনেকে বাইরে বেরিয়ে দেখেন, কয়েক জন একটি ছেলেকে ধরে রেখেছে। পরে জানা যায়, তারই নাম গৌতম বারুই। তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ওই বাড়ির লিফ্টের সামনে, ঢোকা এবং বেরোনোর মুখে আছে সিসিটিভি। তা থেকে পাওয়া তথ্য তদন্তে লাগতে পারে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, ওই বাড়িতে নিয়মিত একজন সেলসম্যান আসতেন। তিনি ও আর এক অপরিচিত ব্যক্তি ধৃত চার জনকে দিয়ে এ কাজ করাতে পারেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। |