শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে আসানসোলের একটি বিস্কুট কারখানায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতির নোটিস ঝুলিয়ে দিলেন কর্তৃপক্ষ। ফলে, কর্মহীন হয়ে পড়লেন কয়েকশো শ্রমিক-কর্মী। কারখানার দুই শ্রমিক সংগঠন সিটু এবং আইএনটিটিইউসি-র নেতাদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ অন্যায় ভাবে কাজ বন্ধের নোটিস দিয়েছেন। তারা মালিকপক্ষের কাছে বৈঠক ডাকার আবেদন করেছেন।
আসানসোলের কন্যাপুর শিল্পতালুক এলাকার ওই কারখানার ডিরেক্টর রাকেশপ্রকাশ গুপ্ত অভিযোগ করেন, প্রায় এক মাস ধরে তাঁদের কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। তাঁর দাবি, শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বিনিময়ে যে উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল, শ্রমিকেরা তা করছেন না। ফলে, কারখানার ক্ষতি দিন-দিন বাড়ছে। রাকেশবাবু বলেন, “শ্রমিকদের এই আচরণ পাল্টানোর জন্য সংগঠনের নেতাদের কাছে অনেক বার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হচ্ছে না। তাই কারখানায় অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতির নোটিস ঝুলিয়েছি।” তাঁর আরও দাবি, বিষয়টি মহকুমা প্রশাসন এবং লেবার কমিশনারের কাছে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।
|
কন্যাপুর শিল্পতালুকের কারখানায় নোটিস দেখে জটলা কর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র। |
সিটু নেতা যতন মজুমদার অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেন, মালিকপক্ষ অন্যায় ভাবে কর্মবিরতির নোটিস ঝুলিয়েছেন। তাঁর দাবি, চুক্তি মোতাবেক বেতন দিলেও যে উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি উৎপাদন করাতে চাইছেন মালিকপক্ষ। শ্রমিকেরা এর প্রতিবাদ করেছেন। আরও অভিযোগ, চলতি বছরে এক মাসের বেতন বোনাস হিসেবে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। যতনবাবুর দাবি, “সম্প্রতি আমরা এ সব বিষয় লিখিত আকারে জানিয়েছি মালিকপক্ষকে। কিন্তু তাঁরা আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই কর্মবিরতি ডেকেছেন।” তিনি আরও জানান, তাঁরা কোনও আন্দোলনে যেতে চান না। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আসানসোলের ডেপুটি লেবার কমিশনারকে জানিয়েছেন।
সিটুর মতো একই রাস্তায় হাঁটতে চায় বলে জানিয়েছে আইএনটিটিইউসি। সংগঠনের শিল্পতালুক শাখার সাধারণ সম্পাদক উত্তম খানের অভিযোগ, “মালিকপক্ষ শ্রমিকদের পাওনাগণ্ডা ঠিক মতো মেটাচ্ছেন না। আমরা চাই না, কারখানা বন্ধ হয়ে যাক। কিন্তু শ্রমিকদের স্বার্থও রক্ষা করতে চাই। তাই মালিকদের বকেয়া মেটাতে বলেছিলাম। কিন্তু সে সব না করে কর্তৃপক্ষ আমাদের না জানিয়েই কর্মবিরতির নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছেন।” উত্তমবাবু জানান, তাঁরা বিষয়টি উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। মালিকপক্ষের কাছেও দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন করেছেন। শ্রমিকদের পাওনা না মেটানোর অভিযোগ অবশ্য পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন সংস্থার ডিরেক্টর রাকেশপ্রসাদ গুপ্ত। |