|
|
|
|
রেল বাজেটে দুই জেলার প্রাপ্তি শুধু একটি নতুন ট্রেন
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অন্তর্বর্তী রেল বাজেটে দুই মেদিনীপুরের প্রাপ্তি একটি মাত্র নতুন ট্রেনসাঁতরাগাছি থেকে ঝাড়গ্রাম। সপ্তাহে পাঁচ দিন চলবে। আগে এই দুই জেলার জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বারের অন্তর্বর্তী বাজেটে সেই সব প্রকল্পগুলোর কথা উল্লেখ নেই। এই পরিস্থিতিতে একযোগে কংগ্রেস সরকারের সমালোচনা করেছে বিরোধীরা।
বাজেট ‘জনবিরোধী’ বলে মন্তব্য করেছেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “বাংলার মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। জঙ্গলমহল-সহ দুই মেদিনীপুরের মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। এটা জনবিরোধী বাজেট।” অন্তর্বর্তী রেল বাজেটকে ‘হতাশজনক’ বলে বিঁধেছেন মেদিনীপুরের সিপিআই সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডা। তিনি বলেন, “বাজেটে উল্লেখযোগ্য কিছু নেই। আগে যে সব বড় প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল, তার কিছু নেই। এটা হতাশজনক বাজেট।” সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া অবশ্য বলেন, “খুব ভাল বাজেট হয়েছে। বাংলা অনেকগুলো নতুন ট্রেন পেয়েছে। যাত্রী ভাড়া বাড়েনি। মানুষের চাহিদার কথা ভেবেই বাজেট তৈরি করা হয়েছে।” আর পুরনো প্রকল্পগুলো? মানসবাবুর জবাব, “প্রকল্পগুলো কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে।” কংগ্রেস-শিবিরের বক্তব্য, এ বারের বাজেট বাস্তবমুখী। যেখানে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি নেই। আগে যে সব প্রকল্প ঘোষিত হয়েছে, তা সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব কেন্দ্রের। এ নিয়ে বিরোধী-শিবিরের মাথাব্যাথার কোনও কারণ নেই।
এর আগে মেদিনীপুরের জন্য ঘোষণা করা হয়েছিল, ভাদুতলা-ঝাড়গ্রাম ভায়া লালগড়, পাঁশকুড়া-চন্দ্রকোনা রোড ভায়া ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া, এগরা-বেলদা রেল লাইন হবে। রেলশহর খড়্গপুরে রেল সুরক্ষা কেন্দ্র হবে। খড়্গপুরে লোকো পাইলট ট্রেনিং সেন্টার হবে। মেদিনীপুরে মাল্টি ফাংশনাল কমপ্লেক্স তৈরি হবে। এর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পই ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তিনি রেলমন্ত্রী। বুধবার জেলা সিপিএমের এক নেতা বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বহু প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। তবে, প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান কোথা থেকে আসবে, তা নিশ্চিত করা হয়নি। ফলে, অধিকাংশ প্রকল্প মুখ খুবড়ে পড়ে।” তাঁর কটাক্ষ, “আসলে কতটা কাপড় রয়েছে তা দেখেই জামা তৈরির বরাত দিতে হয়। মানুষ তাই-ই করেন। আর এ ক্ষেত্রে কাপড়ই ছিল না। তাও জামা তৈরির বরাত দেওয়া হয়!”
মেদিনীপুরের সিপিআই সাংসদ বলেন, “পরিস্থিতি যা তাতে আগে যে সব প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলো কবে রূপায়িত হবে, তা কেউ জানে না! রেলে বহু শূন্যপদ পড়ে রয়েছে। সেই শূন্যপদ পূরণেরও কোনও উদ্যোগ নেই। পাঁশকুড়া-খড়্গপুর থার্ড লাইন, গোকুলপুর-খড়্গপুর ডবল লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। কবে শেষ হবে বুঝতে পারছি না!” বস্তুত, থার্ড লাইনের কাজ পাঁশকুড়া থেকে শ্যামচক পর্যন্ত এগিয়েছে। বাকি রয়েছে শ্যামচক থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত। অন্য দিকে, ডবল লাইনের কাজ গোকুলপুর থেকে গিরি ময়দান পর্যন্ত এগিয়েছে। বাকি রয়েছে গিরি ময়দান থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত। অ্যাসোসিয়েশন ফর মেদিনীপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জারের সম্পাদক হিমাংশুবাবুও বলেন, “এই দু’টি লাইন চালু হলে অনেক সুবিধে হবে। কাজ চলছে। তবে, তা দ্রুত শেষ করা জরুরি। আমরা খড়্গপুর স্টেশনের ৭ এবং ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাজও দ্রুত শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।” অন্তর্বর্তী রেলবাজেট নিয়ে হিমাংশুবাবুর প্রতিক্রিয়া, “জেলার মানুষ আশা করেছিলেন, আরও কিছু নতুন ট্রেন চালু হবে। জেলার জন্য প্রকল্প ঘোষিত হলে ভাল হত। অবশ্য এটা অন্তর্বর্তী বাজেট।”
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি যাই হোক। সামনে যেখানে লোকসভা নির্বাচন, সেখানে অন্তর্বর্তী এই রেল বাজেট ‘বাস্তবমুখী’ না ‘হতাশজনক’ তা নিয়ে চাপানউতোর চলবেই। |
|
|
|
|
|