শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠের ‘ওয়ার্ল্ড প্রেসিডেন্ট’ তথা মঠাধ্যক্ষ ভক্তিনির্মল আচার্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ, জাল নথিপত্রের সাহায্যে রেশন ও ভোটার কার্ড তৈরি, ধর্ষণের চেষ্টা, মারধরের মতো অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে নবদ্বীপের ফৌজদারি আদালত।
বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর খোঁজ করছিল পুলিশ। নবদ্বীপ আদালতের সরকারি কৌসুঁলি নবেন্দু মণ্ডল জানান, পুলিশ ইতিমধ্যেই ভক্তিনির্মলের বিরুদ্ধে দু’টি চার্জশিট দাখিল করেছে। আগাম জামিনের আর্জি নিয়ে ভক্তিনির্মল সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হন। নবেন্দুবাবু বলেন, “জামিনের আর্জি খারিজ করে ২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে জানায়, চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে উপস্থিত হতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশও অমান্য করে তিনি এত দিন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।” সোমবার রাতে তাঁকে বীরভূমের বীরচন্দ্রপুরে ওই মঠেরই একটি শাখা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই রাতেই তাঁকে নবদ্বীপ থানায় নিয়ে আসার পরে অসুস্থ বোধ করায় গভীর রাতে ভক্তিনির্মলকে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে সুস্থ বলে ছেড়ে দেন।
ভক্তিনির্মলের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই মিথ্যে। তিনি বলেন, “ভক্তদের একটি অংশ আমাকে মঠাধ্যক্ষ হিসাবে সহ্য করতে না পেরে ষড়যন্ত্র করছে।” নবদ্বীপের কোলেরডাঙায় ১৯৪১ সালে এই মঠের প্রতিষ্ঠা। এখন ১৩৭টি রাষ্ট্রে এই মঠের শাখা রয়েছে। ২০১০ সালে ভক্তিনির্মল এই মঠের প্রধান হন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর আসল নাম বিভাস সিকদার। বাবা রবীন্দ্রনাথ সিকদারের বাড়ি বাংলাদেশের পটুয়াখালির লামনায়। অভিযোগ, বিভাস ১৯৯৩ সালে বেআইনি ভাবে ভারতে আসেন। ওই বছরেই দীক্ষা নিয়ে নতুন নাম হয় নিমাই দাস। একই নামের আর এক ভক্তের রেশন কার্ড জাল করে তিনি নিজের রেশন ও ভোটার কার্ড তৈরি করেন বলে অভিযোগ। ভক্তিনির্মলের অবশ্য দাবি, “আমার বাবা মা বাংলাদেশের বাসিন্দা হলেও আমি এই দেশেরই নাগরিক।”
ভক্তিনির্মলের গ্রেফতারের খবরে এ দিন কার্যত চমকে যায় নবদ্বীপ। অনেক ভক্ত ছুটেও আসেন আদালত চত্বরে। অভিযুক্ত পক্ষের বেশ কয়েক জন আইনজীবী জামিনের জন্য সওয়াল করলেও বিচারক খারিজ করে দেন। |