আইনজীবীকে হেনস্থার নালিশ, কাজ বন্ধ
ক আইনজীবীকে নিগ্রহ ও মাঝরাতে বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টার প্রতিবাদে আদালতের সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ রাখল জেলা বার অ্যাসোসিয়েশেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে পুলিশের কোনও গাড়িকেও আদালতে ঢুকতে দেয়নি তারা। কোনও মামলাতেই সরকার বা অভিযুক্তপক্ষের হয়ে সওয়াল করেননি কোনও আইনজীবী।
বারের সহ-সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “সোমবার বারের সদস্য আইনজীবী শান্তিরঞ্জন হাজরা সিজেএম আদালতে বর্ধমান থানার সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জয় ওরাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন যে ওই সাব ইন্সপেক্টার তাঁকে অহেতুক গালিগালাজ করেছেন। সিজেএম সেলিম আহমেদ আনসারি ঘটনার তদন্ত করে বর্ধমান থানাকে এফআইআর করতে নির্দেশ দেন। পরে রাতে বর্ধমান থানার পুলিশ ওই আইনজীবির বাড়িতে গিয়ে তাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টা ও হেনস্থা করে।”
শান্তিরঞ্জনবাবু বলেন, “আমার বাড়ি বর্ধমানের ভাতছালায়। ছোটনীলপুরেরে বালিডাঙা মৌজায় গত তিন-চার মাস আগে আমরা একটি জায়গা কিনি। সেখানে পাঁচিল সংস্কারের কাজ হচ্ছিল গত ৯ ফেব্রুয়ারি। পাশের জায়গার মালিক কাজে আপত্তি তুলে থানায় জানান। ঘটনাস্থলে এসে বর্ধমান থানার এসআই সঞ্জয় ওরাং আমাদের কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি, কাজ বন্ধ করার ব্যাপারে আদালতের নির্দেশ আছে কি না। তখন ওই পুলিশকর্মী আমাকে বলেন, ‘বেশি কথা বললে, এমন মামলায় আপনাকে গাঁথব যে তিন মাসের বেশি জেলে কাটাবেন। থানায় এসে দেখা করুন। আমি কে, সেখানেই বুঝিয়ে দেব।’’ ওই দিন দুপুরেই শান্তিরঞ্জনবাবু থানায় যান। তাঁর অভিযোগ, “আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়কে ঘটনার কথা জানাতে তিনি গুরুত্ব দেননি। ফলে বাধ্য হয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করি। রাতে দেখি পুলিশ এসে আমার বাড়ির দরজা ভাঙার চেষ্টা করছে, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজও করছে।” শান্তিরঞ্জনবাবু আদালতে দায়ের করা অভিযোগে সাক্ষী হিসেবে যে ব্যক্তির নাম দিয়েছিলেন সেই শেখ বুলুর বাড়িতেও মাঝরাতে পুলিশ যায়। তিনি অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না। শেখ বুলুর দাবি, তাঁকেও মিথ্য মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার কথা সকালে জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বারের অন্যান্য আইনজীবিরা। বিষয়টি জানানো হয় জেলা জজ পবনকুমার মণ্ডলকেও। তারপরেই বারের জরুরি সাধারণ সভা ডেকে পুলিশের কাজের প্রতিবাদে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বর্ধমান আদালতে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়। বারের তরফে বলা হয়েছে, জেলা পুলিশের কর্তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতি চলবে। কর্মবিরতি চলার সময়ে আদালত চত্বরে পুলিশের কোনও গাড়ি, প্রিজন ভ্যানও ঢুকছে দেওয়া হবে না বলে আইনজীবীদের দাবি। বারের ওই সিদ্ধান্তের কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, হাইকোর্ট, রাজ্য বার কাউন্সিল, জেলা জজ, জেলাশাসক ও এসপিকে জানানো হয়েছে বলেও বিশ্বজিৎবাবুর দাবি।
বর্ধমানের এসপি সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “ওই উকিলবাবু সঞ্জয় ওরাংকে জাত তুলে গালিগালাজ করেন। পরে বিপদ হতে পারে বুঝে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। ওই সাব-ইন্সপেক্টরকেও আইনজীবীর বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই পুলিশ ওই উকিল ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বুলু শেখকে খুঁজতে গিয়েছিল।”
এ দিকে অভিযুক্ত এসআই সঞ্জয় ওরাংকে সোমবারই আউশগ্রামের গুসকরা ফাঁড়িতে বদলি করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। এসপি অবশ্য বলেছেন, “এটা রুটিন বদলি। সিজেএম আদালতে দায়ের হওয়া অভিযোগের সঙ্গে সঞ্জয়ের বদলির কোনও সম্পর্ক নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.