অমিল কিট, এইচআইভি
পরীক্ষা বন্ধ রামপুরহাটে
কিটের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে হাসপাতালের এইচআইভি পরীক্ষার ব্যবস্থা। গত এক মাস ধরে ওই অচলাবস্থা জারি। কিন্তু তার কোনও খবরই নেই জেলার মুখ্য স্বাস্থ আধিকারিককের কাছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার জানানো হলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের এই চাপান-উতোরের মাঝে পড়ে ভুগছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষিত ‘জেলা হাসপাতাল’ রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালের এইচআইভি পরীক্ষা কেন্দ্র (আইসিটিসি)।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৫ ডিসেম্বর শেষবার ওই পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ৫০০টি কিট জেলা হাসপাতালে যোগান দেওয়া হয়েছিল। গত ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই সংখ্যক কিট নিয়েই এইচআইভি পরীক্ষার কাজ চলেছে। কিন্তু তারপর থেকেই যোগান বন্ধ। ওই হাসপাতালে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩৫০ জনের ওই পরীক্ষা করানো হয়। তাঁদের মধ্যে গর্ভবতী মা যেমন আছেন তেমনই আছেন যক্ষা রোগীরাও। এ ছাড়াও যৌন রোগে আক্রান্তদের পাশাপাশি বাইরে থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি সংস্থাও এখানে এইচআইভি পরীক্ষা করানোর জন্য রোগী পাঠায়। এমন একটি কেন্দ্রে কিটের অভাবে ওই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় বিপদে পড়েছেন বহু মানুষ।
‘ন্যাশনাল এডস্ কন্ট্রোল’ সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে জেলার ১৪টি ব্লকের ১০০টি গ্রামে কাজ করছে ‘সিনি’ নামে একটি সংস্থা। সংস্থার জেলা রিসোর্স প্রোগ্রামের ইনচার্জ শৈবাল মাইতি বলেন, “বীরভূমের ১০০টি গ্রামে আমাদের ৪০ জন কর্মী কাজ করছেন। রামপুরহাট এলাকার প্রতিনিধিরা আমাকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি মহকুমা হাসপাতালে কিটের অভাবে এইচআইভি পরীক্ষা বন্ধ আছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, কিট না আসা পর্যন্ত আমাদের সংস্থা থেকে যেন কোনও রোগীকে ওই পরীক্ষার জন্য পাঠানো না হয়।” এইচআইভি রোগ নিয়ে মহকুমার রামরামপুর, বগটুই, আয়াষ এলাকায় কাজ করেন স্বাস্থ্যকর্মী আলমগির কবীর। তিনি বলছেন, “এক মাস ধরে রামপুরহাটে কিট নেই। আমার নজরদারিতে থাকা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে এইচআইভি পরীক্ষা করাতে না পেরে ঘুরে যেতে হয়েছে।” একই অভিজ্ঞতা হয়েছে মাড়গ্রামের তারাপুর, শাসপুর, সন্ধ্যাজোল এলাকার স্বাস্থ্যকর্মী নুরজাহান খাতুনেরও। তাঁর বক্তব্য, “এলাকার অনেকেই কাজের সূত্রে বাইরে থাকেন। তাঁদের বহু কষ্টে বুঝিয়ে এইচআইভি পরীক্ষা করানোর জন্য রাজি করাতে হয়। এ মাসে চার জন যৌনকর্মীকে রাজি করিয়েও রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে কিটের অভাবে ওঁদের পরীক্ষা করাতে পারিনি।”
এ দিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর দাবি, কিটে না থাকার কথা জেলাতে একাধিক বার জানানো হয়েছে। কিন্ত উপরমহল থেকে জোগান নেই বলেই দায় সাড়া হয়েছে। হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদার সম্প্রতি বদলি হয়েছেন। নতুন সুপার সুবোধ মণ্ডল এখনও কাজে যোগ দেননি। ফোনে হিমাদ্রিবাবু বলেন, “কিটের অভাবে এইচআইভি পরীক্ষা বন্ধ আছে। সে কথা জেলাতে নির্দিষ্ট জায়গাতেই জানানো হয়েছে।” যদিও রামপুরহাট জেলা হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমানাথ মার্ডি বলেন, “আমাকে কেউ কিট অমিলের কথা জানাননি। তবে, জেলাতেও তো অভাব ছিল। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় স্তরে কিট কিনে পরিস্থিতি খানিকটা সামাল দেওয়া যেত।”
জেলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এইচআইভি কিট ডেপুটি সিএমওএইচ ২-এর দফতর থেকে জেলার হাসপাতালগুলির আইসিটিসি কেন্দ্রগুলিতে জোগান দেওয়া হয়। সমস্যার কথা শুনে ডেপুটি সিএমওএইচ ২ শুভব্রত ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “জেলাতে তো ওই কিটের অভাব নেই। রামপুরহাটে যে কিট নেই, তা আপনার কাছে প্রথম শুনলাম। আজকালের মধ্যেই ওখানে কিট পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।” সিএমওএইচ কার্তিক মণ্ডল বলেন, “রামপুরহাটে এইচআইভি পরীক্ষার কিটের অভাবের কথা কেউ জানাননি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.