জোড়া নারী নিগ্রহের অভিযোগ হাবরায়
মানসিক ভাবে অসুস্থ তরুণীর সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছিল বছর চল্লিশের পড়শি। অভিযোগ, তার পরে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে সে। ধরা পড়ে মেয়ের বাবার পায়ে পড়ে আবার ওই যুবক বলে, “আপনি আমার শ্বশুর। আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করেছি। রেহাই দিন।”
রেহাই মেলেনি। এলাকার লোকজন পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে আগেই বিবাহিত ওই যুবককে। রবিবার সন্ধ্যায় হাবরা পুর এলাকার এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই এলাকারই বাণীপুরে বছর বারোর এক বালিকাকে যৌন নিগ্রহর অভিযোগ ওঠে তার এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।
ক’দিন আগেই হাবরা থানার উদ্যোগে নারীনিগ্রহ রুখতে মিছিল বেরোয় এলাকায়। আলোচনা সভা হয়। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক নারীনিগ্রহ, ধর্ষণের ঘটনা রুখতেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে। জেলা জুড়ে লাগাতার সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ। পোস্টার-ব্যানার লাগিয়ে মহিলাদের জন্য হেল্পলাইনের নম্বর জানানো হয়েছে। তার পরেও এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন মানুষ। হাবরার আইসি অনিল রায় বলেন, “এই ধরনের অপরাধ রুখতে ও সচেতনতা বাড়াতে আমাদের তরফে চেষ্টার ত্রুটি নেই।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবরার বাসিন্দা বছর আঠারোর ওই তরুণী মানসিক ভাবে অসুস্থ, ভাল করে কথা বলতে পারেন না। রবিবার সন্ধ্যায় তরুণীর বাবা বাড়ি ছিলেন না। মা-ও বনগাঁয় চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ওই তরুণী ছাড়া ছিলেন তাঁর বৃদ্ধ দাদু। এলাকারই এক মহিলা ঘটনাচক্রে ওই তরুণীর বাড়ি গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, সেই সময় সুরঞ্জন বল্লভ নামে এক পড়শি যুবককে মেয়েটিকে নিয়ে খাটে শুয়ে থাকতে দেখেন। তরুণীর কাপড়চোপড় এলোমেলো ছিল।
মহিলার চিৎকারে আশপাশের লোকজন সুরঞ্জনকে ধরে ফেলে। দেখা যায়, তরুণীর কপালে সিঁদুর পরানো। সুরঞ্জনের দাবি, সে মেয়েটিকে বিয়ে করেছে। প্রতিবেশীরা খবর দেন মেয়েটির বাবাকে। সুরঞ্জনকে বেঁধে রেখে মারধর করা হয়। পরে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। রবিবার রাতে মেয়েটিকে ভর্তি করানো হয় হাবরা হাসপাতালে। প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। ধৃতকে তিন দিন পুলিশ হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বারাসত আদালতের বিচারক।
সুরঞ্জনের আগে মাছের ব্যবসা ছিল। তার এক আত্মীয়ার দাবি, বছর খানেক আগে আত্মহত্যা করেছিল সুরঞ্জনের কিশোরী মেয়ে। তারপর থেকে সে কিছুটা অসংলগ্ন আচরণ করত। মেয়েটির বাবা বলেন, “মেয়ে মানসিক ভাবে অসুস্থ। তার উপরেও এমন অত্যাচার হল!”
অন্য ঘটনাটিতে, রবিবার রাতে চাউমিন খাওয়াবে বলে বাণীপুরের ওই বালিকাকে ডেকেছিল প্রতিবেশী সমীর হালদার। বছর চল্লিশের ওই ব্যক্তির চাউমিনের স্টল আছে। অভিযোগ, মেয়েটি স্টলে আসার পরে, পাশের একটি ক্লাবের বারান্দায় নিয়ে গিয়ে সমীর তাকে যৌন নিগ্রহ করে। কিন্তু সেই সময় কয়েক জনের নজর পড়ায় পালায় সমীর। পরে পাড়ার কিছু লোক দুই পরিবারের মধ্যে সালিশির চেষ্টা করে। অভিযোগ, টাকা নিয়ে ঝামেলা মেটানোর পরামর্শ দেওয়া হয় মেয়েটির পরিবারকে। কিন্তু তাতে সায় ছিল না মেয়ের বাবা-মায়ের। সোমবার খবর জানাজানি হওয়ায় মেয়েটির পরিবারের পাশে দাঁড়ায় আরও কিছু লোক। সমীরের পক্ষ নিয়ে পাড়ার কিছু লোক তাদের সঙ্গে গোলমালে জড়ায়। দু’পক্ষের মারামারি বাধে। পুলিশের দাবি, সমীর পলাতক। ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। যে ক্লাবের বারান্দায় মেয়েটিকে নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ, সেটি সিপিএম প্রভাবিত বলে এলাকায় পরিচিত। দুই পরিবারের সালিশিতেও সিপিএমের লোকজন মাথা গলান বলে তৃণমূলের দাবি। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “দুষ্কৃতীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে সিপিএম।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.